নিজের লক্ষ্য পূরণের পথে এগিয়ে চলেছে মুন্নি খাতুন

গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী মুন্নি খাতুন।

'আমাকে লেখাপড়া করে শিক্ষক হয়ে মানুষের মত মানুষ হতে হবে। দেশের মানুষকে স্বশিক্ষিত করে গড়ে তোলার চেষ্টা করব। সে সঙ্গে সমাজের অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়াব।' এই কথাগুলো গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী মুন্নি খাতুন।

মুন্নি খাতুন তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট। বড় দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে অনেক আগেই। নিয়ামতপুর উপজেলার কামদেবপুর নামক এক প্রত্যন্ত গ্রামের মিজানুর রহমান এবং সাহিদা বেগমের সন্তান সে। এসএসসি পরীক্ষার্থী মুন্নি লেখাপড়ায় খুব মনোযোগী এবং সে নিয়মিত স্কুলে আসে। গত বছরে মুন্নি শতভাগ বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছিল। আর তাই শিক্ষকেরা তাকে খুবই স্নেহ করেন। মুন্নি লেখাপড়ার প্রতি খুব আগ্রহী। সে যেমন ক্লাসে প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিনই করেছে, ঠিক তেমনি তার ক্লাসে যারা পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থী ছিল তাদেরও লেখাপড়ায় আগ্রহী করে তোলার চেষ্টা করেছে। সে চায় তার ক্লাসের সবাই যেন প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন শেষ করতে পারে। মুন্নি নিয়মিত স্কুলে আসত তাই সে সবাইকে বলে প্রতিদিন স্কুলে আসার মজাটাই আলাদা। প্রতিদিন স্কুলে না আসলে ক্লাসের পড়াতে কোনো মনোযোগ থাকে না, আর তাই সামনের পড়া গুলো বোঝাও যায় না।

মুন্নির বাবা মিজানুর রহমান বলেন, ‘অভাবের কারণে বড় দুই মেয়েকে বেশি দূর পর্যন্ত লেখাপড়া করাতে পারিনি। মুন্নি লেখাপড়ায় খুব আগ্রহী, তাই সে যতদূর লেখাপড়া করতে চায় আমার কষ্ট হলেও আমি পড়াব। আমার ছেলে নাই, মুন্নি আমার স্বপ্ন পূরণের একমাত্র অবলম্বন। আশা করি আমার মেয়ের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল অনেক ভালো হবে। প্রথম আলো ট্রাস্ট আমার মেয়ের পড়ালেখার জন্য অনেক সাহায্য করেছে, যা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। অসংখ্য ধন্যবাদ প্রথম আলো ট্রাস্ট ও গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার সকল শিক্ষককে।’

মুন্নি জানায়, ‘স্কুল যেতে আমার খুব ভালো লাগে। প্রায় প্রতি বছরই আমার স্কুলে শতভাগ উপস্থিতি ছিল। লেখাপড়া শেষ করে আমি একজন শিক্ষক হতে চাই। আমার গরিব বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে চাই। আমি একজন আদর্শ শিক্ষক হয়ে দেশ ও জাতির স্বার্থে কাজ করতে চাই।’