পড়ালেখার পাশাপাশি সংসারের হাল ধরেছে পিতৃহীন বিজয় মার্ডী

মাত্র দু-বছর বয়সেই পিতা কৃষ্ণ মার্ডিকে হারায় কোল ক্ষুদ্র জাতিসত্তার কলেজছাত্র বিজয় মার্ডী। সেই থেকে তার মা দেউলি হাসদা দুই সন্তানকে নিয়ে জীবন সংগ্রামে নামেন। অভাবের সংসারে নানা কষ্ট করে ছেলেদের পড়ালেখা করান। নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েই বিজয় মার্ডী তার পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে। এখন সে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বিশ্বনাথপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র।

আলোর পাঠশালার প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিজয় মার্ডী।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের বাবুডাইং গ্রামে বাস বিজয় মার্ডীর। সে বাবুডাইং আলোর পাঠশালায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ গ্রহণ করে ২০২১ সালে এসএসসি পাস করে। পরে কলেজে ভর্তি হয়। বাবা মারা যাওয়ার পর সে ও তার ভাই মায়ের সঙ্গে কৃষিকাজ করে সংসারের খরচ বহন করে থাকে। মায়ের বয়স হয়ে যাওয়ায় এখন আর আগের মত কাজ করতে পারেন না। তাই বড় ভাই ও সে মিলে সংসারে খরচ জোগান দেয়। নিজে ধান রোপণ, ধান কাটা, আগাছা নিড়ানি, ফলের বাগান পরিচর্যা ও ফল আহরণের কাজ করে। কাজ করে পাওয়া টাকা দিয়ে নিজের পড়ালেখার খরচসহ সংসারের খরচ জোগান দেয়। পড়ালেখার পাশাপাশি বিজয় একজন ভালো ফুটবল খেলোয়ারও।

বিজয় মার্ডী বলে, ‘হয়তো মাধ্যমিক শ্রেণি পাস করার পর কলেজে পড়াশোনা আমার দ্বারা হতো না। কিন্তু বাবুডাইং আলোর পাঠশালার কারণে আজ আমি কলেজে ভর্তি হতে পেরেছি। বরেন্দ্র এলাকার এ প্রত্যন্ত অঞ্চলে আগে ছিল না কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগেই বাবুডাইং আলোর পাঠশালা প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানেই পড়াশোনা করে আমি বড় হয়েছি। শিক্ষকদের আদর ও ভালোবাসার কারণেই আমি আজ এতদূর আসতে পেরেছি। আমাদের সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়েরা এগিয়ে আসতে পেরেছে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক শেষ করে কলেজে ভর্তি হতে পারছে। এ জন্য প্রথম আলো ট্রাস্টকে ধন্যবাদ। আমি পড়াশোনা শেষ করে শিক্ষক হতে চাই।'