দমদমিয়া আলোর পাঠশালার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সালমা আক্তার বড় হয়ে একজন আদর্শ শিক্ষক হতে চায়। নজুম উদ্দিন ও হাফছা বিবি দম্পতির মেয়ে সালমা। দুই ভাইবোনের মধ্যে সালমা বড়। সালমার বাবা দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। কিন্তু প্রায় এক বছর হলো অসুস্থতার জন্য শয্যাশায়ী তিনি। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেন না। এভাবেই অভাব অনটনে দিন কাটে সালমাদের। এদিকে সালমার মা টুকটাক কাজ করে কোনোমতে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন সংসার। এত অপূর্ণতা নিয়েও পড়াশোনা করে যাচ্ছে সালমা। বিদ্যালয়ে সে নিয়মিত, পড়াশোনায় বেশ ভালো। সে স্বপ্ন দেখে পড়াশোনা শেষ করে শিক্ষক হবে। হাফছা বিবি সালমার খাতা কলমের খরচ বহন করতে পারেন না। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তার খরচ বহন করে।
এত প্রতিকূলতার মাঝেও সালমার ইচ্ছে সে পড়াশোনা চালিয়ে যাবে। সে শিক্ষার গুরুত্ব বুঝে। শিক্ষা একজন মানুষের জীবন কিভাবে বদলে দেয় সেটা সে নিজেকে দিয়েই বুঝে। তাই এই অনগ্রসর অঞ্চলের শিক্ষা বিস্তারে নিজেকে নিয়োজিত করতে চায়।
বড় হয়ে কেন শিক্ষক হতে চাও এমন প্রশ্ন করলে সালমা জানায়, ‘এই অঞ্চলের মানুষ শিক্ষা সম্পর্কে উদাসীন। শিক্ষার সুযোগ থাকলেও শুধুমাত্র সচেতনতার অভাবে অনেকেই পড়াশোনা করে না। এ কারণে এই অঞ্চলের মানুষ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে যায়। মেয়েদের বাল্যবিয়ে দেওয়া হয়, সম্ভাবনাময় অনেকেই অকালে ঝড়ে পরে। তাই আমি এই অঞ্চলের মানুষের মাঝে শিক্ষা বিস্তারে কাজ করতে চাই। আমি একজন আদর্শ শিক্ষক হয়ে প্রতিটি ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো জ্বালাতে চাই।’