দমদমিয়া আলোর পাঠশালায় টেকনাফ ব্যাটালিয়নের (২-বিজিবি) উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২৪ জুলাই, ২০২৫ রোজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন টেকনাফ ব্যাটালিয়নের (২-বিজিবি) সিইও লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান। চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন ডাক্তার মেজর মো. শাহাদত হোসেন শুভ। সহযোগী হিসেবে ছিলেন মেডিকেল সহকারী হাবিলদার মো. জহিরুল ইসলাম, মেডিকেল সহকারী নায়েক মো. মাসুদ রানা, মেডিকেল সহকারী সিপাহী মো. কাউছার হামিদ ও মেডিকেল সহকারী সিপাহী মো. মোরসালিম। অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রী রাজেশ কুমার কানু ও সহকারী শিক্ষকবৃন্দ।
বেলা ১১টা থেকে বিরতিহীনভাবে দুপুর ৩টা পর্যন্ত চলে এই ক্যাম্প। জ্বর, ব্যথা, স্কিন ডিজিজ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, পুষ্টিহীনতাসহ অন্যান্য সাধারণ রোগের চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি ওষুধও দেওয়া হয়। এজিথ্রোমাইসিন, প্যারাসিটামল, সেটরিজিন, মাল্টিভিটামিন, ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স, টাইমোনিয়াম মিলাইলসালফেট, এটোরভাসটাটিন, ন্যাপ্রোক্সেন সোডিয়াম সহ আরও অন্যান্য বিভিন্ন প্রকার মূল্যবান ওষুধ প্রদান করা হয়। এই ক্যাম্পে ৪২ জন পুরুষ, ৬৩ জন মহিলা এবং বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য ৫২ জন শিশুসহ মোট ১৫৭ জন রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন। রোগীরা অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে সেবা গ্রহণ করেন। দমদমিয়া একটি প্রান্তিক এলাকা সেই সঙ্গে এখানকার বেশির ভাগ মানুষ হতদরিদ্র। তাই বিনা মূল্যে চিকিৎসা এবং ওষুধ পেয়ে সকলেই ভীষণ উচ্ছ্বসিত ছিল। সকল রোগী এই আয়োজনের জন্য দমদমিয়া আলোর পাঠশালার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকসহ আশপাশের অনেক দুস্থ মানুষ চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন।
ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা রহিমা খাতুন চিকিৎসা এবং ওষুধ পাওয়ার পরে বলেন, ‘আজ প্রায় ১৫ দিন ধরে জ্বর আর ব্যথার কারণে বিছানা থেকে উঠতে পারি না৷ আমি গরিব মানুষ। টাকার অভাবে ডাক্তার দেখাতে পারি না, আর ওষুধ কেনার মতো টাকাও নেই। কিন্তু আজ আমি চিকিৎসা এবং ওষুধ পেয়েছি। ওষুধ খেয়ে সুস্থ হয়ে আমি এই স্কুলের জন্য দোয়া করব।’ আগত সকলে বিদ্যালয়ের এই মহতী উদ্যোগের প্রশংসা করেন। রোগীদের চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি সকল শিক্ষার্থীদের মেডিকেল চেকআপ এবং অনেক শিক্ষার্থীদের ভিটামিন জাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়।
বিদ্যালয় পরিদর্শনকালে সিইও লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, ‘এমন প্রান্তিক এলাকায় প্রথম আলো ট্রাস্ট এত সুন্দর একটি বিদ্যালয় পরিচালনা করছে এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয়। ভালো লাগছে যে, এত সুন্দর একটা ভেন্যুতে আমরা আজ চিকিৎসা দিতে পারলাম। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে খুব ভালো লাগল, তারা খুব সম্ভাবনাময়।’ এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু খেলনা ও অন্যান্য কিছু সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন। এ ছাড়া আগামীতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য ওরাল স্যালাইন, সেটরিজিন সিরাপ, মেট্রোনিডাজল সিরাপ, কৃমিনাশক সিরাপ, আলবেন্ডাজল ট্যাবলেট, প্যারাসিটামল সিরাপ ইত্যাদি ওষুধ দিয়েছেন।