মদনপুর আলোর পাঠশালার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সামিয়া বেগম। বাবা মনির হোসেন পেশায় একজন রিকশাচালক। গৃহিণী মা মরিয়ম বেগম, খুবই অসুস্থ। অভাবের সংসারে মায়ের চিকিৎসা খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছে না সামিয়ার বাবার পক্ষে। কোনরকম জীবনযাপন করছে তারা। এমতাবস্থায় মেয়ের লেখাপড়া খরচ চালাতেও অপারগ মনির হোসেন। সে জন্য সামিয়ার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু সামিয়া পড়াশোনা করতে চায়। তখন একমাত্র ভরসা হিসাবে পাশে পায় মদনপুর আলোর পাঠশালাকে।
সামিয়ার পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার খবর পেয়ে সামিয়ার নানা তাঁর নাতনিকে লেখাপড়া করানোর জন্য নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। সামিয়ার বাড়ি পার্শ্ববর্তী উপজেলা লালমোহনে। এদিকে সামিয়ার নানা একজন জেলে ও বৃদ্ধ লোক। তাঁর পক্ষেও নাতনির লেখাপড়ার খরচ চালানো অসম্ভব।
সামিয়ার নানা মদনপুরের বাসিন্দা হওয়ায় মদনপুর আলোর পাঠশালার খবর তিনি জানেন। তিনি জানেন মদনপুর আলোর পাঠশালায় লেখাপড়ার জন্য কোন টাকা পয়সা খরচ হয় না। তাই তিনি নাতনিকে লেখাপড়া করানোর জন্য পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। ভর্তি করিয়ে দেন মদনপুর আলোর পাঠশালায়। এখন সামিয়া নানার বাড়ি থেকেই মদনপুর আলোর পাঠশালায় বিনা খরচে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়ন করছে সামিয়া।
খাল বিল পেরিয়ে অত্যন্ত প্রতিকূল পরিবেশে সামিয়া নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়। লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে দৃঢ় সংকল্প নিয়ে। সামিয়া ছোট হলেও স্বপ্ন তার অনেক বড়। সে লেখাপড়া করে তার পরিবারের দায়িত্ব নিবে। পরিবারের মুখে হাসি ফুটাবে। হাসি ফুটাবে তার নানার পরিবারও। এই স্বপ্ন নিয়ে সামিয়া মদনপুর আলোর পাঠশালায় লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। সে সকলের কাছে দোয়া চায় যাতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে এবং বড় হয়ে যেন তার পরিবারে হাসি ফুটাতে পারে।