১৪ বছরের জেসমিন। বর্তমানে সে রাজশাহী আলোর পাঠশালায় নবম শ্রেণিতে পড়ছে। স্বপ্ন দেখেন বড় হয়ে শিক্ষক হবেন, মানুষের সেবা করবেন কিন্তু তার এই স্বপ্নযাত্রায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল পরিবার। অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত অবস্থায় মাত্র ১৩ বছর বয়সে মা ও সৎ বাবা তার বিয়ে ঠিক করে। নির্ভীক জেসমিন বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেয় রাজশাহী আলোর পাঠশালায়। শিক্ষকদের জানায়, ইচ্ছার বিরুদ্ধে মা জোর করে তাকে বিয়ে দিচ্ছে। এই বিয়ে বন্ধ করতে হবে।
রাজশাহী আলোর পাঠশালার শিক্ষকেরা জেসমিনের বিয়ে বন্ধ করেন। এদিকে বাল্যবিয়ে বন্ধ হওয়ায় জেসমিনের মা, মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালাতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তী সময়ে স্কুলের শিক্ষকেরা জেসমিনের পড়াশোনার দায়িত্ব নেন।
বাধা পেরোনো জেসমিন ভবিষ্যতে পড়াশোনা নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখেন। অষ্টম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় প্রথম হয়ে এ বছর নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে সে। লেখাপড়ার পাশাপাশি কবিতা লেখা, ছবি আঁকা, নাচ, গান ও বিতর্ক চর্চায় নিয়মিত অংশ নেয় জেসমিন। এসব বিষয়ে স্কুলের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছে সে। অদম্য জেসমিন পড়াশোনা শেষে করে শিক্ষক হতে চায়। এ প্রসঙ্গে সে বলে, ‘আমি স্বপ্ন দেখি পড়ালেখা শেষ করে আদর্শ শিক্ষক হব। সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সহযোগিতা করবো। আর আমি কবিতা পড়তে খুব ভালোবাসি। সকলের সহযোগিতা পেলে আমি আমার স্বপ্নপূরণ করবোই।’
উল্লেখ্য, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে রাজশাহী আলোর পাঠশালাসহ মোট সাতটি স্কুল পরিচালনা করছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। সাতটি স্কুলে মোট ১ হাজার ৩৫০ জন শিক্ষার্থী বিনা মূল্যে পড়াশোনা করছে।