রাজশাহী আলোর পাঠশালার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শিহাব আলী মনি। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে তার প্রায় ২৫ জন বন্ধু অভাবের কারণে ঝরে পড়েছে। সে এখন একাই ওই শ্রেণির ছেলে শিক্ষার্থী। ছোট বেলা থেকে পরিবারের অভাব দেখে আসছে সে। তারও পড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল অনেক বার। বাবা অটো চালায়, মা গৃহিণী। ছোট দুইটা বোন। স্কুল ছুটি পেলেই সে দোকানে কাজে চলে যায়। রোজার মধ্যেও কসমেটিকস এর দোকানে রাত দুইটা পর্যন্ত কাজ করে তারপরে বাসায় ফিরেছে। এভাবেই সংগ্রাম করে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে শিহাব। কাজ করে পড়াশোনা করেও সে একদিনও স্কুলে অনুপস্থিত থাকে না। গত বছর শতভাগ উপস্থিতিও ছিল তার। কেন কাজ করে জিজ্ঞেস করলে সে বলে, ' আমার বোন দুইটা কে আর আমার মা কে কোনো কিছু কিনে দিতে ইচ্ছে করে। এবার ইদেও ওদের জামাকাপড় কিনে দিয়েছি। বাবা তো অটো চালিয়ে এত কিছু করতে পারেন না। আমার লেখাপড়ার খরচই ঠিকমতো দিতে পারেন না। দশম শ্রেণির সহায়ক বই ও কিনেছি নিজের টাকায়। আমি চাই পড়াশোনার পাশাপাশি আমার পরিবারেও কিছু না কিছু অবদান রাখতে। যতটা পারি আমার বাবার কষ্ট লাঘব করতে চাই।'
শিহাব পড়াশোনাতেও অনেক ভালো। সে এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হয়েই ব্যবসায় যেতে চায়। এখনই কেন ব্যবসা করতে চায় জিজ্ঞেস করলে সে বলে, এখন থেকে শিখে রাখলে বড় হয়ে সে একজন বড় ব্যবসায়ী হতে পারবে। তখন তার বাবাকে অটো চালাতে হবে না এবং মা কে অভাবে থাকতে হবে না। তার নিজ খরচে সে তার বোনদের পড়াশোনা করাতে পারবে বলে তার বিশ্বাস। পরিবারের হাল ধরতে গিয়ে অন্য সবার মতো শিহাবের পড়াশোনা থেমে যায়নি। শত কষ্টের মধ্যেও সে ঠিকমতো পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চায়। বিনা বেতনে পড়াশোনার সুযোগ দেওয়ার জন্য প্রথম আলো ট্রাস্টকে কৃতজ্ঞতা জানায় শিহাব।