আলোর পাঠশালার জান্নাতুল ফিরদাউস ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চান

গুড়িহারী–কামদেবপুর আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফিরদাউস।

জান্নাতুল ফিরদাউস বিতর্ক ও আবৃত্তি করতে ভালোবসেন। এবার পড়াশোনাতেও ভালো ফল করলেন গুড়িহারী–কামদেবপুর আলোর পাঠশালার এই শিক্ষার্থী। গত ১২ মে দেশের সব কটি শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমিক পরীক্ষার (এসএসসি) ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফিরদাউস বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পেয়েছেন জিপিএ–৫।

 ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় মনোযোগী জান্নাতুল ফিরদাউস এমন ফলে উচ্ছ্বস প্রকাশ করে বলেন,  ‘আমার এই ফলাফলে বেশি খুশি হয়েছেন আমার স্কুলের শিক্ষকেরা। ওনারা আমার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন। আমিও নিয়মিত পাঠশালায় যেতাম। শিক্ষকেরা আমার লেখাপড়ার প্রতি সবসময় খেয়াল রাখতেন। ক্লাস পরীক্ষা, মডেল টেস্টে আমি নিয়মিত অংশ নিয়েছি। আমি আমার পরিশ্রমের ফল পেয়েছি। আমি ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চাই।’

নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রাম গুড়িহারি শালবাড়ি। গ্রামটিতে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও আশে পাশে প্রায় ৫-৭ কিলোমিটারের মধ্যে ছিলনা কোন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। অবহেলিত গ্রামটির শিশুরা শিক্ষার পরিবর্তে অল্প বয়সেই বিভিন্ন কায়িক শ্রমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ত। প্রথম আলো ট্রাস্ট সামিট গ্রুপের সহযোগিতায় ২০১৫ সালে গুড়িহারী–কামদেবপুর আলোর পাঠশালা প্রতিষ্ঠা করে।

গুড়িহারী- কামদেবপুর আলোর পাঠশালার সভাপতি আব্দুল আজিজ বলেন, ‘গ্রামের শিক্ষা বিস্তারে গুড়িহারী–কামদেবপুর আলোর পাঠশালা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আমাদের পাঠশালার শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় ভালো করছে। এবছর একজন শিক্ষার্থী জিপিএ–৫ পেয়েছি। সামনের বছর আরও ভালো ফল প্রত্যাশা করছি।’

মেয়ে ভবিষ্যতে চিকিৎসক হবেন, সেই স্বপ্ন দেখেন জান্নাতুল ফিরদাউসের বাবা আব্দুল জলিল।  কৃষি কাজের পাশাপাশি মেয়েকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়তে উৎসাহ দিয়েছেন তিনি। আব্দুল জলিল বলেন, এখানে আলোর পাঠশালা প্রতিষ্ঠিত না হলে আমার মেয়ের পড়ালেখাই হতো না। আমরা এলাকাবাসী এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।’

গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালা থেকে ২০২৪ সালে ১৩ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। দুজন বিজ্ঞান বিভাগ ও ১১ জন শিক্ষার্থী মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নেন। মানবিক বিভাগের ২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে।