বাবুডাইং আলোর পাঠশালার দশম শ্রেণির নিয়মিত শিক্ষার্থী গীতা মুর্মু। গীতা পড়াশোনার পাশাপাশি স্কুলের সাংস্কৃতিক দলেরও নিয়মিত সদস্য। কিন্তু সব ছাপিয়ে সময় সুযোগ পেলেই গ্রামের ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে ফুটবল খেলতে নেমে পড়ে সে। স্কুলে টিফিনের ফাঁকে অন্য শিক্ষার্থীরা কেউ পত্র-পত্রিকা পড়ে বা কেউ কেউ অন্যান্য খেলায় মেতে থাকলেও গীতা ফুটবল ও সঙ্গী খুঁজে নিয়ে মাঠে নেমে পড়ে। ফুটবলের সঠিক কলাকৌশলের অভাব থাকলেও সে তার নিজের দক্ষতায় মাঠে অপ্রতিরোধ্য।
গীতার বাবা নরেন মুর্মু কৃষি কাজের সাথে যুক্ত এবং মা জোসদা টুডু পেশায় গৃহিণী। বাবা-মায়ের তিন সন্তানের মধ্যে গীতা দ্বিতীয় সন্তান। গীতা ছাড়াও তাঁদের তৃতীয় সন্তান নিরব মুর্মু বাবুডাইং আলোর পাঠশালার পঞ্চম শেণির শিক্ষার্থী। বড় মেয়ে পবিত্রী মুর্মুর বিয়ে হয়ে গেছে কলেজে পড়ার সময়। সেও বাবুডাইং আলোর পাঠশালা থেকে এসএসসি পাস করে। অভাবের সংসারে মাঝে মধ্যে কৃষিকাজের সাথেও যুক্ত হতে হয় তাকে।
জোসদা টুডু বলেন, আমাদের এই অঞ্চলে প্রায় সবাই দরিদ্র শ্রেনির। পরিবারের সবাইকে কোন না কোন কাজে যুক্ত থাকতে হয়। সব সময় কাজ থাকে না। স্কুল ছুটি থাকলে অন্য ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন মৌসুমি কাজে যুক্ত হয়। কিন্তু গীতার কাজের চেয়ে খেলায় মনোযোগ বেশি, একটু চঞ্চল প্রকৃতির। সুযোগ পেলেই বা বৃষ্টি নামলেই গ্রামের ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে ফুটবল খেলতে নেমে পড়ে। কোন বাধা মানে না। সে বড় হয়েছে, মাঝে মাঝে বকাঝকা করি কিন্তু শুনে না। শুনেছি সে নাকি ভালো খেলে। টিভিতে মেয়েদের খেলা দেখে, খুব ভালো লাগে তার। স্কুলের শিক্ষকরাও বলেন, প্রশিক্ষণের সুযোগ পেলে সে ভালো খেলবে।