নির্ভীক জেসমিনের ঈদ ভাবনা

জেসমিন, রাজশাহী আলোর পাঠশালার অষ্ঠম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

জেসমিন রাজশাহী আলোর পাঠশালার অষ্ঠম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বয়স ১৩। কবিতা পড়তে ভালোবাসেন আর স্বপ্ন দেখেন বড় হয়ে ডাক্তার হবেন, মানুষের সেবা করবেন। কিন্তু তার এই স্বপ্নযাত্রায় বাধা হয়ে দাঁড়ায় পরিবার। মা ও সৎ বাবা তার বিয়ে ঠিক করে। গত ১০ মার্চ নির্ভীক জেসমিন বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেয় আলোর পাঠশালায়। শিক্ষকদের জানায়, ইচ্ছার বিরুদ্ধে মা জোর করে তাকে বিয়ে দিচ্ছে। এই বিয়ে বন্ধ করতে হবে। শিক্ষকেরা সব শুনে জেসমিনের বিয়ে বন্ধ করেন।

পত্র–পত্রিকায় খবর প্রকাশের কারণে দেশজুড়ে এই ঘটনা বেশ সাড়া ফেলেছে। সকলেই জেসমিনের নির্ভীকতার প্রশংসা করেছেন। সম্প্রতি জেসমিনের সঙ্গে কথা হয়। জানতে চাওয়া হয় তার ঈদ ভাবনা। জেসমিন বলেন, ‘আমি এবার ঈদ করবো নানু বাড়িতে। ইতিমধ্যে নানু বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলে এসেছি। এখানে আমার নানু, মামা, খালা ও ভাই–বোনেরা রয়েছেন। সকলে মিলে এবার ঈদে খুব মজা করবো। আমার দুই খালাতো বোন আমেনা ও মোমেনা আপু আমাকে নতুন জমা দিয়েছে। ইচ্ছে আছে ঈদের দিন নতুন জামা গায়ে দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পার্কে বেড়াতে যাবে।’

পড়াশোনা নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখেন জেসমিন। সে জানায় , আমার পড়াশোনা করতে খুব ভালোলাগে। কিন্তু  অভাবের কারনে পরিবার বিয়ে দিতে চায়। আমার কষ্টের শেষ নেই। আমি স্বপ্ন দেখি পড়ালেখা শেষ করে বড় ডাক্তার হব। আর আমি কবিতা পড়তে খুব ভালোবাসি। সুকুমার রায়ের ‘পন্ডশ্রম’ আমার প্রিয় কবিতা। সকলের সহযোগিতা পেলে আমি আমার স্বপ্নপূরণ করবই।

জেসমিনের স্বপপূরণে প্রথম থেকেই সহযোগিতা করছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। সামিট গ্রুপ ও আঞ্জুমান-আজিজ ট্রাস্টের সহযোগিতায় প্রথম আলো ট্রস্ট পরিচালিত রাজশাহী আলোর পাঠশালায় নিখরচায়  সে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে। জেসমিনকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় ইতিমধ্যে মোস্তাফিজ ও ফারুক আহমেদ নামে ঢাকার দুই বাসিন্দা রাজশাহী আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক রেজিনা খাতুনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এই দুই ব্যাক্তি জেসমিনের পড়ালেখায় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।