প্রতিবন্ধী হয়েও নিয়মিত লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে রুপালি বালা

গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার দশম শ্রেণির ছাত্রী কুমারী রুপালী বালা।

নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর থানার গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার দশম শ্রেণির ছাত্রী কুমারী রুপালী বালা । রুপালী বালার বাড়ি পানিশাইল গ্রামে। হিন্দু সম্প্রদায়ের ছোট পরিবারে জন্ম তার। মা ডলি রানী একজন গৃহিণী। বাবা একজন ভ্যানচালক। রুপালীরা দুই বোন। দুই বোনের মধ্যে রুপালী বড়। সে বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধী। সমাজের চোখে এরা অবহেলিত। কিন্তু সমাজে এদেরও অধিকার রয়েছে। আমাদের উচিত প্রতিবন্ধী শিশুদের সাহায্য সহযোগিতা করা ও বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়ানো । সে আট দশটা মেয়ের মতো স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারে না।

রূপালি বালা গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয় ২০২১। সে তার বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা করে। সে বিদ্যালয়ে নিয়মিত আসে। ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে এই দুই বছরে সে বিদ্যালয়ে শতভাগ উপস্থিত ছিল। রুপালী বালা স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় মোমবাতি দৌড় প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে। তার এ অর্জনে রুপালী বালা অত্যন্ত আনন্দিত। তার পাশাপাশি শিক্ষক -শিক্ষিকাদের ও আনন্দের শেষ নেই। রুপালীর সহপাঠীরা সবাই তাকে সাহায্য সহযোগিতা করে। তার সাথে খেলাধুলা করে আনন্দ দেয়। রুপালীর বিষয়ে জানতে চাইলে তার মা ডলি রানী বলেন,' আমার মেয়ে ছোটবেলায় কথা বলতে পারতো না। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিষয়ক ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করে এখন একটু একটু কথা বলতে পারে। ডাক্তার বলেছে, কথা বলতে পারবে কিন্তু দেরি হবে। বুলি ফুটতে ওর ৯ বছর লেগেছে। আমি চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। এখন আমার মেয়ে এখন অনেকটাই সুস্থ আছে। আমার মেয়ে লেখাপড়ায় বেশ মনোযোগী। সে পড়তে পারে না কিন্তু লিখতে পারে। এভাবেই সে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। রূপালী বালার অনেকটা মানসিক বিকাশ হয়েছে স্কুলে আসার জন্যই। স্কুল আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে তার প্রতিভা বিকাশিত হয়েছে।'

পানিশাইল গ্রামের শোভা রানী বলে,রুপালী বালা সামনে বার এস,এস-সি পরীক্ষা দিবে। আমাদের মত গরীব অসহায় লোকের সন্তানদের জন্যই গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালা স্কুল। এই আলোর পাঠশালা আছে বলে রুপালী বালার মতো প্রতিবন্ধী মেয়ে লেখাপড়া করে এসএসসি পর্যন্ত যেতে পারলো। আমরা চাই এভাবেই গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালা আমাদের পাশে থাকুক। প্রথম আলো ট্রাস্ট আমাদের সঙ্গে আছে বলেই আমরা বিনা বেতনে পড়ালেখা করার সুযোগ পাচ্ছি।