নার্স হয়ে সব ধরনের রোগীর সেবা করতে চায় তুলি

রাজশাহী আলোর পাঠশালার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুরাইয়া ইসলাম তুলি।

প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত রাজশাহী আলোর পাঠশালার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুরাইয়া ইসলাম তুলি। স্কুলের পাশের নদীর পাড়ের বস্তিতে তার বাড়ি। বাবা অটো চালক, মা বাসা বাড়িতে কাজ করেন। চার ভাই বোনের মধ্যে তুলি তার বাবা মায়ের দ্বিতীয় সন্তান। তার মায়ের বাল্য বিবাহ হয়েছিল। এই জন্য তিনি চান তার মেয়েদেরকে পড়াশোনা শেষ করে তারপরে বিয়ে দিবেন। কিন্তু তার মায়ের এই স্বপ্ন পরিবারের অভাবের কাছে বার বার বাধাগ্রস্থ হয়। অভাবের কারণে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণিতে ওঠা পর্যন্ত প্রায় ৩-৪ বার পড়াশোনা বাদ হয়ে যাচ্ছিল তুলির। পরিবারের অভাবের পাশাপাশি ধবল নামে একটি বিরল রোগ আছে তুলির। যে কারণে সে মাঝে মাঝে লজ্জায় স্কুলে আসতে চাইতো না। কারণ এই রোগের চিকিৎসা করার মতো সামর্থ্য তাদের নেই। কিন্তু এখন সে বুঝতে পেরেছে এই রোগের জন্য লজ্জায় স্কুলে না আসা মানে তার ভবিষ্যতও তার মা-বাবার মতই হবে। স্কুলে না আসলে সে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে না। তার এই রোগের জন্য তার বন্ধুরা অনেকে তার কাছে আসতে চায়না। হসপিটালে ডাক্তারের কাছে গেলেও অনেকে তার পাশে বসে থাকলে উঠে চলে যায়। সে জানে এ রোগ ছোঁয়াচে না কিন্তু তার কথা তো কেউ শোনেনা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তুলি বলে, বড় হয়ে সে একজন নার্স হয়ে মানুষকে দেখিয়ে দিতে চায় কোনো রোগ বা রোগীকেই ঘৃণার চোখে দেখা উচিত না। সে এখন একজন স্কুল শিক্ষার্থী মাত্র, তাই তার কথা কেউ শোনেনা। কিন্তু যখন সে নার্স হবে তখন ঠিকই সব ধরনের রোগীকে সেবা করবে বলে তার বিশ্বাস এবং স্বপ্ন। সে নার্স হয়ে তার মা এর স্বপ্নও পূরণ করতে চায়। যাতে তার মা-কে আর অন্যের বাসায় কাজ করতে না হয়। এরকম হাজারো তুলির মনের রং তুলিতে আঁকা স্বপ্ন পূরণ করতে কাজ করে চলেছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। বিনা বেতনে পড়াশোনার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য প্রথম আলো ট্রাস্টকে কৃতজ্ঞতা জানায় তুলি।