‘প্রত্যন্ত এলাকার একটি বিদ্যালয়ে মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিনের সুব্যবস্থা দেখে খুবই মুগ্ধ হয়েছি। শিক্ষার্থীদের উষ্ণ অভ্যর্থনা, স্বতঃস্ফূর্তভাবে মেশা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড খুব ভালো লেগেছে। এ জন্যই বলে শিক্ষা হচ্ছে শক্তি।’গতকাল রোববার দুপুরে বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শনে এসে এ মন্তব্য করেন বেলজিয়াম নাগরিক অ্যানাবেল ভারগেলস।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাবুডাইং গ্রামে প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসেন ১৩ জন বিদেশি পর্যটক। তাঁদের মধ্যে ১২ জন বেলজিয়াম ও একজন নেদারল্যান্ডসের নাগরিক। পর্যটকদের মধ্যে সাতজন নারী ও ছয়জন পুরুষ ছিলেন। বাংলাদেশ ইকো অ্যাডভেঞ্চার নামে একটি পর্যটন সংস্থা তাঁদের এ বিদ্যালয়ে নিয়ে আসে।
দলের নেতৃত্ব দেন বেলজিয়াম নাগরিক অ্যানাবেল ভারগেলস। দলের সকলেই বিভিন্ন পেশা থেকে অবসরপ্রাপ্ত। বেলা সোয়া ১১টার দিকে পর্যটকেরা বাবুডাইং গ্রামে এসে উপস্থিত হন। প্রথমে তাঁরা কোল ক্ষুদ্র জাতিসত্তা অধ্যুষিত গ্রামটি ঘুরে দেখেন। তাঁদের জীবনযাত্রার বিষয় সম্পর্কে খোঁজ নেন। গ্রামের মাটির দেয়ালে আলপনা আঁকার ছবি তোলেন। গ্রামের শিশু ও বয়স্কদের সঙ্গে ভাব বিনিময় করেন। নারী-পুরুষদের কর্মব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। এরপর দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আসতেই বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক দলের সদস্যরা তাঁদের ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানায়। তাঁদের সামনে উপস্থাপন করে কোলদের ঐতিহ্যবাহী ঝুমুরসহ অন্যান্য নাচ-গান। এ সময় পর্যটকেরা শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান। তাদের পারিবারিক বিষয়ে খোঁজখবর নেন। শেষে শিক্ষার্থীদের জন্য তাঁরা শিক্ষা উপকরণ হিসেবে কলম বিতরণ করেন। এর আগে তাঁরা চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী কাঁসা শিল্পের উপকরণ তৈরির কারখানাগুলো পরিদর্শন করেন।
পর্যটক দলের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন বেলজিয়ামের নাগরিক মার্গারেট ভার্স্ট্রিপেন, মার্কেল ডিয়ালেন্স, কার্ট ভ্যান ডের কুইলেন, রিলে ভ্যান ডেন কিইবুম, হ্যানস হিলিবুয়েক, আন্নে-মিয়েকে মেলফেইট, লুটগার্ড ভ্যান ডেন কীবাস, আন্নে মেয়েনস, রিটা ভ্যান লুই, রুডি মাইকেলস, মারিয়া ডি বুশ্চার ও নেদারল্যান্ডসের নাগরিক জন ক্লোয়েক, পর্যটন সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাদি হাসান, রাজশাহী বিভাগীয় কো-অর্ডিনেটর ও আইনজীবী নাজিব ফেরদৌসসহ অন্যরা।
বিদ্যালয়সহ গ্রাম পরিদর্শনে পর্যটকদের সহযোগিতা করেন বাবুডাইং আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক আলী উজ্জামান নূর, সহকারী প্রধান শিক্ষক শংকর চন্দ্র দাস, সিনিয়র শিক্ষক লুইশ মুর্মু, বিমল হাঁসদাক, নির্মল কোল, খণ্ডকালীন শিক্ষক ট্রেম হাঁসদা, কম্পিউটার অপারেটর মেহেদী হাসান।