নাফের নীল জল ছুঁয়ে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে দমদমিয়া আলোর পাঠশালা

দমদমিয়া আলোর পাঠশালা,টেকনাফ,হৃীলা।

দেশের সর্ব দক্ষিণের উপজেলা টেকনাফের একটি গ্রামের নাম ‘দমদমিয়া’। গ্রামটির এক পাশে সবুজ পাহাড়ের সারি। আর এক দিকে খাঁড়িসদৃশ নাফ নদী। আর নাফের নীল জল ছুঁয়ে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে গ্রামটির অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দমদমিয়া আলোর পাঠশালা।

কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার হৃীলা ইউনিয়নে দমদমিয়া গ্রামের অবস্থান।  গ্রামটিতে প্রায় নয় হাজার মানুষের বসবাস। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এক সময় গ্রামে কোনো বিদ্যালয় ছিলো না। গ্রামের সাধারণ মানুষ বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়। পরবর্তী সময়ে স্থানীয় দুই সহোদর বনি আমিন ও ছৈয়দুল আমিন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য ৪০ শতক জমি দান করেন। গ্রামবাসীর উদ্যোগে ১৯৯৪ সালে স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই সময় গ্রামের অধিকাংশ মানুষ  দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা কম ছিল। একটি ছাপড়া ঘরে স্কুলের কার্যক্রম পরিচালিত হতো। পরবর্তী সময়ে ইউরোপিয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে স্কুলের জন্য একটি  পাকা ভবন নির্মাণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু  আর্থিক সমস্যার কারণে স্কুলটির কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। সামিট গ্রুপের সহযোগিতায় ২০২০ সালে প্রথম আলো ট্রাস্ট স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। তখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৬৪ জন আর শিক্ষক ছিলেন মাত্র দুই জন। বর্তমানে স্কুলে ১৫১জন শিক্ষার্থী ও পাঁচজন শিক্ষক রয়েছেন।

দমদমিয়া আলোর পাঠশালা প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা নুর মোহাম্মদের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, এই অঞ্চলের শিক্ষা বিস্তারে স্কুলটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে স্কুলটিতে এখন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। এই গ্রামে কোন মাধ্যমিক স্কুল নেই। আমাদের দাবি স্কুলটিতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান চালু করা হোক।

পাঠশালাটির অবস্থান নদী ও পাহাড়ের মাঝখানে হওয়ায় চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সহজেই মন কাড়ে। পাঠশালার পেছনের প্রান্তে দাঁড়ালে দেখা যায় মিয়ানমারের সীমানা, নাফের স্বচ্ছ নীল জল, গাঙচিলের ওড়াউড়ি আর জেলেদের মাছ ধরা।

টেকনাফ–কক্সবাজার মহাসড়কের পাশ ঘেঁষে অবস্থিত দমদমিয়া আলোর পাঠশালায় বর্তমানে চরটি শ্রেণি কক্ষ রয়েছে। পাঠশালা ভবনের সামনে একটি খেলার মাঠও রয়েছে।

 উল্লেখ্য, সামিট গ্রুপ ও আঞ্জুমান–আজিজ চ্যারিটেবল ট্রাস্টের সহযোগিতায় দেশব্যাপি ৭টি পাঠশালা প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হচ্ছে।