ঝড় বৃষ্টি মাথায় নিয়েও স্কুলে শতভাগ উপস্থিতি সিয়ামের

গুঁড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সিয়াম বাবু।

মোহাম্মদ সিয়াম বাবু গুঁড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সিয়াম ২০২৪ সালে এ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। বিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার পর থেকেই লেখাপড়ার পাশাপাশি বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হারও সন্তোষজনক। তার বাড়ি থেকে গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার দূরত্ব প্রায় ৪ কিলোমিটার। স্কুল দূরে হওয়া সত্ত্বেও নিয়মিত স্কুলে আসে। এমনকি ঝড়-বৃষ্টি হলেও খালি পায়ে কাদা মাটি মাড়িয়ে নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকে সিয়াম।

কদমবাড়ি গ্রামের কৃষক মো. শহিদুল ইসলামের ছেলে সিয়াম। সিয়ামের মা মোসা. সালমা বেগম একজন গৃহিণী। দুই ভাইবোন ও মা-বাবাকে নিয়ে সিয়ামের পরিবার। ভাইবোনের মধ্যে সিয়াম বড়, ছোট বোনের বয়স মাত্র ৪ বছর। বাবা শহিদুল ইসলামের নিজের তেমন জমিজমা নেই। কিন্তু ছেলের পড়াশোনা ও পরিবারের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ছেলে সিয়াম বাবু লেখাপড়া পড়ায় বেশ মনোযোগী। সে নিয়মিত বিদ্যালয়ে যায়। বিদ্যালয় কামাই করতে চায় না। বৃষ্টি বাদল যাই হোক তার বিদ্যালয়ে যেতেই হবে। আমরা টাকার অভাবে লেখাপড়া করতে পারিনি। কিন্তু আমরা আমাদের সন্তানদের লেখাপড়া করাতে চাই। গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালা অনেক ভালো একটা স্কুল। এখানে পড়তে কোন খরচ লাগে না। আমাদের মতো গরিব মানুষের জন্য আলোর পাঠশালা হলো ভরসা। ফ্রি স্কুল ড্রেস, কম্বলসহ আরও অনেক সময় অনেক অনুদান দেন আলোর পাঠশালা থেকে। ধন্যবাদ প্রথম আলো ট্রাস্ট ও গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালাকে।’

সিয়াম বলে, ‘আমার বিদ্যালয়ের নাম গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালা। আমার স্কুলে যেতে খুব ভালো লাগে। আমাদের স্কুলে প্রতিটি বিষয়ে অনেক ভালো করে বুঝিয়ে পড়ানো হয়। এতে করে পড়া আত্মস্থ করতে আমার কোন সমস্যা হয় না। আমার স্কুল সেরা স্কুল।’

গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার সহকারী শিক্ষক রাকিবুল ইসলাম বলেন, 'সিয়াম বাবু অনেক ভদ্র ও শান্ত। সে লেখাপড়ায় খুবই মনোযোগী। ঝড় বৃষ্টি মাথায় নিয়েও সে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়। আমার তার মঙ্গল কামনা করি।’