শিক্ষা কর্মকর্তা হতে চান বেলাল ইসলাম

বেলাল ইসলাম

নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে বসত ভিটা। তার উপর প্রতিটি দিন জীবনের সঙ্গে প্রাণপণ লড়াই করতে হচ্ছে বেলাল ইসলামকে। ছোটবেলা থেকেই পারিবারিক সংকট দেখছে সে। বেলালের বাবা আমিনুল ইসলাম গ্রামে একটি মুদি দোকান চালাতো। ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গনে গ্রামটি বিলীন হয়ে যায়। সর্বস্বান্ত আমিনুল ইসলাম জীবিকার সন্ধানে ঢাকায় চলে আসেন। বিয়ে করেন অন্য এক নারীকে আর বেলালদের খোঁজখবর রাখেননি। কিন্তু সম্মানের সঙ্গে  বেঁচে থাকার লড়াইয়ে হাল ছাড়েননি বেলাল।

প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালার সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী বেলাল ভবিষ্যতে শিক্ষার পথ ধরেই জীবনে প্রতিষ্ঠা পেতে চান। পাঠশালাটি  কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নে অবস্থিত। বেলাল ইসলাম সম্পর্কে পাঠশালার প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান বলেন, ‘বেলাল তার আরও তিন ভাইবোনসহ গ্রামে থাকে। মা ঢাকায় গার্মেন্টস শ্রমিক হিসাবে কাজ করে। নিদারুন পারিবারিক সংকটের মধ্যেও বেলাল পড়াশোনায় ভালো করছে। কৃতিত্বের সাথে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে সে সপ্তম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েছে।  পড়াশোনার পাশাপাশি আবৃত্তি, গল্পের বই পড়া, শরীর চর্চাতে আগ্রহ রয়েছে বেলালের। আমরা প্রত্যশা করি শিক্ষার পথে থাকলে ভবিষ্যতে সে ভালো কিছু করবে।’

বেলাল ইতিমধ্যে তার জীবনের লক্ষ্য ঠিক করেছেন। সে বলে, ‘যত কষ্টই হোক লেখাপড়া শেষ করতে হবে। আমি স্কুল–কলেজের লেখাপড়া শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাই। ভবিষ্যতে শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করতে চাই। ’  

উল্লেখ্য, প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মোট সাতটি স্কুল পরিচালনা করছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। রাজশাহীতে ২ টি, কুড়িগ্রাম, ভোলা, নওগাঁ, টেকনাফ ও বান্দরবানে ১টি করে মোট সাতটি স্কুলে ১ হাজার ৩৫০ জন শিক্ষার্থী বিনা মূল্যে পড়াশোনা করছে।