'আমাকে লেখাপড়া শিখে ডাক্তার হতে হবে। যাতে গরিব ও সমাজে অবহেলিতদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা করতে পারি। এ ছাড়াও দেশের আনাচকানাচে সকল মানুষের সেবা করে যেতে পারি-এটাই আমার প্রত্যাশা'। কথাগুলো গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোসা. সাফিয়া খাতুনের।
সাফিয়া খাতুন গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার দশম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী। এই স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর থেকে নিয়মিত প্রথম স্থান অধিকার করছে। সে স্কুলের নিয়মিত ছাত্রী এবং পড়াশোনায় বেশ মনোযোগী। পরিবারের বাবা-মা এবং দুই ভাইবোন। দুই ভাইবোনের মধ্যে সাফিয়া বড়। সাফিয়ার বাবা একজন কৃষক। তার নিজের তেমন কোন জমি জমা নেই। নিজের জমির কাজের পাশাপাশি অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করেন বাবা। তার মা একজন গৃহিণী। তার মা নিজের সংসারের কাজের পাশাপাশি অবসর সময়ে দরজির কাজ করেন। তাদের পরিবারের সবারই ইচ্ছা সাফিয়া লেখাপড়া শিখে ডাক্তার হবে। ডাক্তার হয়ে সে যেন সকল শ্রেণির মানুষের সেবা দিতে পারে।
সাফিয়ার বাবা মো. সাফিউল ইসলাম বলেন, ‘আমার মেয়ে লেখাপড়ায় বেশ ভালো। ডাক্তার হওয়ার জন্য যা সাহায্য সহযোগিতার দরকার, সবই করার চেষ্টা করে যাব। আমার মেয়ে ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন দেখে, সে লেখাপড়া শিখে একজন ডাক্তার হবে।’
গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোসা. সাফিয়া বলে, ‘প্রত্যেকের একটা লক্ষ্য থাকে। সেরকম আমার ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন যে, লেখাপড়া শিখে ডাক্তার হওয়া। ডাক্তার হয়ে গরিব ও অবহেলিত মানুষের সেবা করতে পারলে আমার মনের ইচ্ছা পূরণ হবে। আমার সামনে যত বাধাবিপত্তি আসুক না কেন আমাকে লেখাপড়া শেষ করে ডাক্তার হতেই হবে।’
সাফিয়া খাতুন আরও বলে, ‘আমার গ্রামে গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালাটি না থাকলে দূরের স্কুলে পড়ানো আমার বাবা মার জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ত। গ্রামে এমন একটি স্কুল না থাকলে আমি আমার মেধার বিকাশ ও স্বপ্ন দেখতে পারতাম না। গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালায় লেখাপড়া ভালো হয়। কোন প্রাইভেট পড়ার প্রয়োজন হয় না। শিক্ষকেরা আমাকে অনেক সাহায্য সহযোগিতা করেন। এই বিদ্যালয়ে পাঠদানের পাশাপাশি বিশ্ব সাহিত্যের বই পড়া, সহপাঠ্যক্রম, ইংলিশ স্পোকেন ইত্যাদি নিয়মিত অনুশীলন করা হয়। এ ছাড়াও এই বিদ্যালয় থেকে আমাদের গণিত অলিম্পিয়াড, স্বাস্থ্য অলিম্পিয়াড, ওয়াইল্ড লাইফ ইত্যাদি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়।’
গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক রাজিত দাস বলেন, সাফিয়া খাতুন অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী। সে তার স্বপ্ন পূরণের পথে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। সে তার স্বপ্ন পূরণের মাধ্যমে দেশ ও জাতির সেবা করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।