শত প্রতিকূলতার মধ্যেও পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে শারমিন

প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শারমিন।

প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালার ২০২৬ সালের SSC পরিক্ষার্থী শারমিন।সে বরাবরের মতো এবারও ১ম স্থান অধিকার করে দশম শ্রেনিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। শুধু লেখাপড়াতেই সে ভালো এমন না। কবিতা আবৃতিতেও সে অসাধারণ। শারমিনের পরিবার চরবাসী।প্রতিবছর নদী যেন তাদের নিত্য শত্রু হয়ে দাঁড়ায়। এ বছরের শুরুতে গঙ্গাধর নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায় তাদের বসতভিটা। প্রকৃতির এই বৈরিতার মধ্যদিয়ে অন্যের জমিতে চাষ করে কোনো রকম টিকে আছে তার পরিবার। কিন্তু কালক্রমে সেই জমি ছেড়ে অন্য কোন এক জায়গায় স্থায়ী আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজন হয় তার পরিবারের।

শারমিনের পরিবার যেখানে থাকে সেখান থেকে স্কুল অনেক দূরে। একা স্কুলে আসা তার পক্ষে কোন ভাবেই সম্ভব নয়। যেখানে নেই কোন রাস্তা, নেই কোন সুগম পথ। বন্ধ হয়ে যায় শারমিনের লেখাপড়া। প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালার পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষক বিষয়টি জানতে পেরে তার পরিবার ও শারমিনকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, ' স্যার আমার এখানে ভালো লাগছে না। লেখাপড়া করতে না পারায় আমার সময় কাটছে না।আমি আবার পড়ালেখা করতে চাই। লেখাপড়া ছাড়া আমি কোনো ভাবে নিজেকে মেনে নিতে পারছিনা।আমি লেখাপড়া করে ভালো কিছু হতে চাই।' পরে অত্র বিদ্যলয়ের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি অন্যন্য শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করেন এবং শিক্ষকদের অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া, তার সিলেবাস শেষ করে দেওয়া সহ পরিক্ষার প্রস্তুতির সকল পদক্ষেপ গ্রহন করেন যাতে সে তার লক্ষে পৌঁছাতে পারে।তার স্বপ্ন যেন নষ্ট না হয়। এছাড়াও প্রধান শিক্ষক বলেন, জাতি গঠনের কারিগর হিসেবে ঝড়ে পড়া ও শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে তার লক্ষ্যে পৌঁছে দেওয়াও একজন শিক্ষকের মানবিক দ্বায়িত্ব। শারমিন অনেক মেধাবী। আমি চাই তার স্বপ্ন পূরণ হোক।