রাজশাহী আলোর পাঠশালার শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত

রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র পরিদর্শন করেছে রাজশাহী আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষাসফরের উদ্দেশ্য প্রকৃতি, ইতিহাস– ঐতিহ্য অবলোকন ও জ্ঞানার্জন করা। রাজশাহী আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর শিক্ষাসফরে অংশ নেয়। গত ২২ ফেব্রুয়ারি পাকশীস্থ হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে শিক্ষা সফর উপভোগ করে রাজশাহী আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থীরা।  

শিক্ষা সফরে শিক্ষক, শিক্ষার্থী,  পাঠাশালা পরিচালনা পর্যদের সদস্যসহ ৯০ জন অংশগ্রহণ করে।  শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা সকাল ৮টায় হার্ডিঞ্জ ব্রিজের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে সকাল সাড়ে দশটায় গন্তব্য স্থলে পৌঁছে। পাঠশালার শিক্ষকদের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ঘুরে দেখে।

পাবনা জেলার পাকশী রেলস্টেশনের দক্ষিণে পদ্মা নদীর ওপর এই সেতু অবস্থিত।১৮৮৯ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার কলকাতার সঙ্গে আসাম, ত্রিপুরাসহ উত্তরাঞ্চলের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগব্যবস্থা স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এই ব্রিজ তৈরির প্রস্তাব করেছিলেন। সেই সময়ে প্রস্তাবটি কার্যকরী না হলেও তার কয়েক দশক পর ১৯০৯ সাল থেকে ব্রিজটি নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। এই ব্রিজ নির্মাণের সময়কাল ছিল ১৯০৯ থেকে ১৯১৫ সাল পর্যন্ত। তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের নাম অনুসারে ব্রিজটির নামকরণ করা হয়েছিল হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৭৯৮ দশমিক ৩২ মিটার বা ৫ হাজার ৮৯৪ ফুট বা ১ দশমিক ৮ কিলোমিটার। এর ওপরে রয়েছে দুইটি ব্রডগেজ রেললাইন। এই ব্রিজটির নকশা করেছিলেন আলেকজান্ডার মেয়াডোস রেন্ডেল। এই ব্রিজে স্প্যান রয়েছে মোট ১৫টি এবং প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১২০ মিটার। হার্ডিঞ্জ ব্রিজটি চালু করা হয়েছিল ১৯১৫ সালের ৪ মার্চ।

হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও রুপপুর পারমানবিক বিদুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে নৌকা ভ্রমণে অংশ নেয় পাঠশালার শিক্ষার্থীরা।

হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পরিদর্শন শেষে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে অবস্থিত। রাশিয়ার কারিগরী ও আর্থিক সহায়তায় নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। প্রকল্পটিতে দুটি বিদ্যুৎ ইউনিট রয়েছে এবং এর মোট উৎপাদন ক্ষমতা হবে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। প্রতিটি ইউনিটে স্থাপন করা হবে ৩+ প্রজন্মের রুশ ভিভিইআর-১২০০ রিঅ্যাক্টর যা সব আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চাহিদা পূরণে সক্ষম। রসাটম প্রকৌশল শাখা জেনারেল ডিজাইনার এবং কন্ট্রাকটর হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

শিক্ষাসফর প্রসঙ্গে রাজশাহী আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক রেজিনা খাতুন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ঐতিহাসিক হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পরিদর্শনের পাশাপাশি সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত পারমানবিক বিদুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন করেছে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি আমরা শিক্ষার্থীদের  ইতিহাস– ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা দিতে চাই। পদ্মা নদীতে নৌকা ভ্রমণ শিক্ষার্থীরা উপভোগ করেছে।’  শিক্ষাসফরে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ ও পাঠশালা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সামসুল হক।

উল্লেখ্য, প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত রাজশাহী আলোর পাঠশালাটি রাজশাহী শহরের তালাইমাড়িতে অবস্থিত।