পাহাড়ের মেয়ে নেইচিং মারমা শিক্ষার আলো ছড়াতে চায়

কচ্ছপতলি আলোর পাঠশালা অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী নেইচিং মারমা।

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলায় অবস্থিত কচ্ছপতলি আলোর পাঠশালা অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী নেইচিং মারমা। পাহাড়ের এই মেয়ে প্রতিদিন চার কিলোমিটার দূরের পথ পায়ে হেঁটে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করে। জুমচাষি বাবা-মা ও তিন বোন নিতে তাদের পরিবার। তিন বোনের মধ্যে দ্বিতীয় নেইচিং মারমা। জুমচাষি বাবা অংজ মারমা ও মা এখ্যাই মারমার অভাব অনটনের সংসার। তারপরও মেয়েকে পড়ালেখা করতে চায় তারা। তাদের পরিবারে এখনো শিক্ষার আলো পুরোপুরিভাবে পৌঁছায়নি এবং কুসংস্কারের জর্জরিত।

এদিকে নেইচিং মারমা পড়াশোনা প্রতি খুব আগ্রহী। বিদ্যালয়ের একজন নিয়মিত ছাত্রী সে। তার বাবার নিজস্ব জমি বলতে কিছু নেই। পাহাড়ের গিয়ে জুমচাষ করে। জুমচাষে ফাঁকে নিজের পরিবার খরচ ও মেয়ে পড়ালেখা জন্য খাতা, কলম কেনার জন্য দিন মজুরি করে থাকে। নেইচিং মারমা বিদ্যালয়ের বন্ধের সময় জুমে গিয়ে বাবা-মাকে সাহায্য করে।

নেইচিং বাবা বলেন, ‘আমি একজন জুম চাষি, নিজে পড়াশোনা জানি না। তাই মেজ মেয়েকে লেখাপড়ার শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করা ইচ্ছা।’

নেইচিং মারমা জানায়, আমার ইচ্ছা হলো বড় হয়ে গ্রামের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর ছেলেমেয়েদেরকে আলোকিত করা। একজন আদর্শ শিক্ষক হয়ে অবহেলিত শিশুদের মধ্যে সুশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে চাই। এই বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার জন্য কোনো টাকা পয়সা দিতে হয় না বিনা মূল্যে পড়াশোনা করা যায়।

শ্রেণির শিক্ষক নিপা তংচংগ্যা বলেন, ‘নেইচিং মারমা মেধাবী ও খুব ভালো ছাত্রী। লেখা পড়া পাশাপাশি খেলাধুলা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, বিজ্ঞান ক্লাব, গণিত ক্লাব, বিশ্বসাহিত্যের বই বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী। খেলাধুলার মধ্যে ফুটবল খেলা তার প্রিয়। নেইচিং মারমা অবহেলিত মানুষ, সমাজে ও রাষ্ট্রের জন্য ভবিষ্যতে কাজ করবে বলে আশাবাদী। নাইচিং মারমা স্বপ্নগুলো সার্থক হোক শুভকামনা ও আশীর্বাদ রইল।’