আলোর পাঠশালার সাবেক শিক্ষার্থী আব্দুর রহিম সংসারের হাল ধরেছেন

আব্দুর রহিম। প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালার সাবেক শিক্ষার্থী।

আব্দুর রহিম। প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালা থেকে ২০১৮ সালে জেএসসি পাশ করেছেন। আর্থিক টানাপোড়নের কারনে এইসএসসি পাশ করেই নিজের পড়ালেখায় ইতি টেনেছেন। কিন্তু পরিবারের দায়িত্ব নিতে ভোলেননি আব্দুর রহিম। ঘোগাদহ মালেকা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক পদে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন তিনি। মা–বাবা ছাড়াও সংসারে আছে দুই ভাই।

টাকার জন্য নিজের পড়ালেখা হয়নি। তাই ছোট দুই ভাইকে পড়াশোনা করিয়ে বড় করার জেদ ছাড়েনি আব্দুর রহিম। ছোট দুই ভাইও নিরাশ করেনি তাকে। এক ভাই ফজলুর রহমান ২০২৪ সালে প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ–৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। অন্যজন ফজলার রহমান একই পাঠশালা থেকে ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

আব্দুর রহিমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাবার স্বল্প আয়ে পরিবার ঠিকমত চলছিল না। তাই নিরুপায় হয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু কীভাবে যে কী করবে বুঝে উঠতে পারছিল না সে। ঠিক করে নিজে আর পড়ালেখা করবে না। স্থানীয় একটি স্কুলে অফিস সহায়ক পদে চাকরি নেয় সে।  কিন্তু সংসার খরচ তাতে কুলোয় না। চাকরির পাশাপাশি বাবার ব্যবসার কাজেও সহযোগিতা করে আব্দুর রহিম। তার এই উদ্যোগ দেখে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালার শিক্ষকরাও। দুই ভাই আলোর পাঠশালায় বিনামূল্যে পড়াশোনাটা করছেন। আত্মপ্রত্যয়ী আব্দুর রহিম দুই ভাইকে পড়াশোনা করিয়ে ভালো মানুষ হিসেব বড় করতে চান।

এ প্রসঙ্গে প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান বলেন- ‘সমাজের সার্বিক উন্নয়নের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষার মাধ্যমে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে পড়ে এবং সমাজের আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়। এই দুর্গম এলাকার ইতিবাচক পরিবর্তনে প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালা অঙ্গীকারাবদ্ধ। শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ এবং পরিবার ও সমাজের প্রতি দায়বোধ সৃষ্টির কাজটা আমরা করার চেষ্টা করছি।’

উল্লেখ্য, প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মোট সাতটি স্কুল পরিচালনা করছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। কুড়িগ্রামে ১ টি, রাজশাহীতে ২ টি, ভোলায় ১ টি, নওগাঁয় ১ টি, টেকনাফে ১টি ও বান্দরবানে ১টি করে সাতটি স্কুলে মোট ১ হাজার ৩৫০ জন শিক্ষার্থী বিনা মূল্যে পড়াশোনা করছে।