প্রথম আলো ট্রাস্ট কর্তৃক পরিচালিত দমদমিয়া আলোর পাঠশালার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী কাওসার ফাতেমা বড় হয়ে কৃষিবিদ হতে চায়। আব্দুর রহিম এবং রহিমা বেগম দম্পতির চার ছেলেমেয়ের মধ্যে কাওসার দ্বিতীয়। আব্দুর রহিম পেশায় একজন জেলে। একটা সময় নাফ নদীতে মাছ ধরে জীবীকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু মিয়ানমারের রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য দীর্ঘদিন ধরে সেই আয়ের পথও বন্ধ। এখন একপ্রকার অভাব অনটনের মধ্যেই চলে তার সংসার৷ প্রায় দুই কিলোমিটার দূর থেকে প্রতিদিন পায়ে হেঁটে স্কুলে আসে ফাতেমা। ক্লাসে তার উপস্থিতি শতভাগ। রোদ, ঝড়, বৃষ্টি বা যেকোনো প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগেও সে স্কুল মিস করে না। পিতার আর্থিক সঙ্গতি না থাকলেও পড়াশোনার প্রতি তার অদম্য ইচ্ছে।
পড়াশোনার পাশাপাশি কৃষি কাজের প্রতি ফাতেমার বিশেষ আগ্রহ আছে। বাড়িতে সে নিজের প্রচেষ্টায় গড়ে তুলেছে সবজি বাগান। প্রতিদিন সকাল আর বিকেলে যে তার বাগানে কাজ করে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টার পরিচালিত ' ক্ষুদে কৃষিবিদ ' টিমের সদস্য ফাতেমা। সে স্বপ্ন দেখে বড় হয়ে উন্নত কৃষি প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা করবে। ফাতেমা বলে, ' আমি বড় হয়ে কৃষি প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা করতে চাই। আমাদের এলাকায় পাহাড়ি জমি হবার কারণে এখানে তেমন কিছুই আবাদ করা যায় না৷ তাই আমি কৃষি প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা করে এই অঞ্চলের মানুষকে কৃষি কাজে সহযোগিতা করে স্বাবলম্বী করতে চাই। প্রথম আলো ট্রাস্টকে ধন্যবাদ আমাদের মতো প্রান্তিক এলাকার মানুষকে স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহযোগিতা করার জন্য।' ফাতেমা প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রী রাজেশ কুমার কানু বলেন, মেয়েটা পড়াশোনায় বেশ মনযোগী এবং নিয়মিত। কোনো কারণে সে স্কুল মিস করে না। ক্ষুদে কৃষিবিদ টিমেও সে সাফল্যের স্বাক্ষর রাখছে। সহযোগিতা এবং সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মেয়েটি তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে।