মাকে আগলে রেখে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে অদম্য এক কিশোরী

রাজশাহীর আলো পাঠশালার ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌসী স্বপ্না।

জান্নাতুল ফেরদৌসী স্বপ্না। রাজশাহীর আলো পাঠশালার ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী সে। কাছেই বাড়ি হওয়া সত্ত্বেও মায়ের সার্বক্ষণিক দেখভালের কারণে তার পক্ষে নিয়মিত স্কুলে উপস্থিত থাকা সম্ভব হয় না। দুই বছর আগে বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই মানসিকভাবে অসুস্থ মায়ের অভিভাবকের ভূমিকা পালন করছে স্বপ্না। যেখানে মায়ের মেয়ের পাশে থাকার কথা, সেখানে স্বপ্না তার অসুস্থ মা-কে আগলে রেখেছে। এসব প্রতিকূলতা সত্ত্বেও স্বপ্নার স্বপ্ন অনেক বড়। সে লেখাপড়া শেষ করে নিজের একটি সেলাই কাজের ব্যবসা দাঁড় করাতে চায়। তার লক্ষ্য হলো—সেখানে মায়ের মতো অসহায় মানুষ এবং দুস্থ মেয়েদের কর্মসংস্থান করা, যেন তাদের কারও ওপর নির্ভর করে থাকতে না হয়।

স্বপ্না জানায়, স্কুলের সার্বিক সহযোগিতা এবং বেতন ছাড়া পড়ার সুযোগ থাকার কারণেই দশম শ্রেণি পর্যন্ত তার পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। বাড়িতে এত অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষক ও স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়ায় সে এখনও নিয়মিত স্কুলে আসছে। প্রতিটি ক্লাসের মাঝে সে বাড়ি গিয়ে মা-কে দেখে আসে। বোনটির মতো যেন তার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে না যায়, সেদিকেই স্বপ্নার খেয়াল। সে চায় সারাজীবন তার মায়ের জন্য একজন ‘ঢাল’ হয়ে থাকতে। প্রথম আলো ট্রাস্টের কাছে স্বপ্না কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলে, ' প্রথম আলো ট্রাস্ট বিনা বেতনে পড়াশোনার সুযোগ না দিলে এবং স্কুলের শিক্ষকদের সহযোগিতা না থাকলে আমার পক্ষে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো না। তারা আছে বলেই আমি অনেক বড় কিছুর স্বপ্ন দেখার সাহস পাচ্ছি।'