সামিট গ্রুপ ও আঞ্জুমান-আজিজ চ্যারিটেবল ট্রাস্টের সহযোগিতায় দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় ৭টি স্কুল পরিচালনা করছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। এই সাতটি স্কুল ‘আলোর পাঠশালা’ নামে পরিচালিত হয়। এ সব স্কুলের ৫টি স্কুল থেকে এ বছর অনুষ্ঠিত এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেয়। মোট অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল ৪১ জন। এদের মধ্যে ২ জন জিপিএ-৫ সহ ৩৩ জন বিভিন্ন গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ৮ জন অকৃতকার্য হয়েছেন। পাসের হার ৮০.৪৯ শতাংশ।
পাঁচটি স্কুলের বিস্তারিত ফলাফল:
নওগাঁর নিয়ামতপুরে অবস্থিত ‘গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালা’ থেকে মোট ১৩ জন এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। দুজন বিজ্ঞান বিভাগ ও ১১ জন মানবিক বিভাগ থেকে অংশ নেন। তার মধ্যে ১১ জন কৃতকার্য হয়েছেন এবং মানবিক বিভাগের ২ জন অকৃতকার্য হয়েছেন। কৃতকার্যদের মধ্যে জান্নাতুল ফিরদাউস জুঁই বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে শীর্ষস্থান অর্জন করেছেন। বাকিরা বিভিন্ন গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
রাজশাহীর তালাইমারীতে অবস্থিত ‘রাজশাহী আলোর পাঠশালা’ থেকে মোট ৮ জন এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। পাসের হার শতভাগ। শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকেই দুর্গম এলাকা চর-খিদিরপুর থেকে পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে তাঁরা পড়াশোনা চালিয়েছেন। শতভাগ পাস করায় তাঁরা প্রত্যেকেই আনন্দিত। শান্তনা খাতুন তাঁর ফলাফল জেনে আবেগ আপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন এবং সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আটজনের মধ্যে সবচেয়ে ভালো করেছেন সাকিব হাসান। তিনি ৪.৩৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
কুড়িগ্রামের ঘোগাদহে অবস্থিত ‘প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালা’ থেকে ৫ জন শিক্ষার্থী এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে চারজন উত্তীর্ণ হয়েছেন। ফজলুর রহমান বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে শীর্ষস্থান পেয়েছেন।
ভোলার দৌলতখান উপজেলার মদনপুর চরে অবস্থিত ‘মদনপুর আলোর পাঠশালা’ থেকে মোট ১০ জন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। কৃতকার্য হয়েছে ৭ জন, অকৃতকার্য ৩ জন। দশজনের মধ্যে সবচেয়ে ভালো করেছেন জান্নাত বেগম। তিনি ৩.৩৯ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অঞ্চলে অবস্থিত ‘বাবুডাইং আলোর পাঠশালা’ থেকে মোট ৫ জন অংশ নেন। কৃতকার্য হয়েছে ৩ জন, অকৃতকার্য ২ জন। সকলেই মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী।
বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় যেখানে শিক্ষার আলো পৌঁছায়নি, এ রকম অবহেলিত কয়েকটি এলাকায় শিক্ষার আলো পৌঁছে দিচ্ছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। অবহেলিত এসব এলাকার শিশুরা শিক্ষার পরিবর্তে অল্প বয়সেই বিভিন্ন কায়িক শ্রমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ত। এর পেছনে অসচেতনতার পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভাব ছিল একটি বড় কারণ। এমতাবস্থায় তাদের ফিরিয়ে এনে পড়াশোনায় আগ্রহী করতে কাজ প্রথম আলো ট্রাস্ট। সামিট গ্রুপ ও আঞ্জুমান-আজিজ ট্রাস্টের সহযোগিতায় কুড়িগ্রামে ১ টি, রাজশাহীতে ২ টি, ভোলায় ১ টি, নওগাঁয় ১ টি, টেকনাফে ১টি ও বান্দরবানে ১টি করে সাতটি স্কুল পরিচালনা করছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। এ সব স্কুলে মোট ১ হাজার ৩৫০ জন শিক্ষার্থী বিনা মূল্যে পড়াশোনা করছে।