দমদমিয়া আলোর পাঠশালায় প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের জন্মবার্ষিকী পালন

দমদমিয়া আলোর পাঠশালায় ইংরেজদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামী বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের জন্মবার্ষিকী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রথম আলো ট্রাস্ট কর্তৃক পরিচালিত দমদমিয়া আলোর পাঠশালায় ইংরেজদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামী বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের জন্মবার্ষিকী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর বারোটায় এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান শিক্ষক শ্রী রাজেশ কুমার কানু, সহকারী শিক্ষক মো. জোনায়েদ, সৈয়দ নুর, রবিউল আলম ও আমান উল্লাহ। অনুষ্ঠানে প্রত্যেক শিক্ষক প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের জীবনের একটি করে অংশ নিয়ে আলোচনা করেন। এই প্রেক্ষাপটে মো. জোনায়েদ প্রীতিলতার জন্ম ও বেড়ে ওঠা; সৈয়দ নুর প্রীতিলতার শিক্ষাজীবন; রবিউল আলম প্রীতিলতার স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগদান এবং আমান উল্লাহ স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রীতিলতার ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন।

প্রধান আলোচক শ্রী রাজেশ কুমার কানু প্রীতিলতার সামগ্রিক জীবন, ইংরেজদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামে তার ভূমিকা, আত্মবলিদান নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘ভারত উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে চট্টগ্রামের মেয়ে বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার এক স্মরণীয় নাম। স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালীন তিনি চট্টগ্রামের নন্দনকানন গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। তিনি ছিলেন অসীম সাহসী এক নারী। অগ্নিশিখার মতো দীপ্ত এক নাম, অমর বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। একজন নারী হয়ে যিনি হয়েছিলেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের এক সাহসী মুখ। যে সাহস, দৃঢ়তা আর আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত তিনি রেখে গিয়েছেন, তা সব যুগের নারীদের জন্য প্রেরণা হয়ে থাকবে চিরকাল'।

মাত্র ২১ বছর বয়সে নিজের জীবন উৎসর্গ করে স্বাধীনতার যুদ্ধে লিখেছিলেন তাঁর আত্মত্যাগের মহাকাব্য। আজ তাঁর ১১৪ তম জন্মদিনে আমরা কেবল তাঁর জীবনী নয়, তাঁর সাহসকে, তাঁর আত্মবলিদানকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামী মাস্টারদা সূর্য সেনের সহযোগী ছিলেন। তারা বিচ্ছিন্নভাবে ইংরেজদের বিরুদ্ধে অনেক হামলা সফলভাবে পরিচালনা করেন।

আলোচনা শেষে "প্রীতিলতার স্বাধীনতা সংগ্রাম" শীর্ষক এক রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এতে অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী তিনজনকে পুরস্কৃত করা হয়। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছানা উল্লাহ বলে, ' আজ জানলাম প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার আমাদের চট্টগ্রাম বিভাগের মানুষ। অথচ এত দিন তার কথা কখনো শুনিনি। এমন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামীর কথা আমাদের সকলের জানা দরকার। তাঁদের কথা শুনলে, জানলে আমরা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস জানব। আর তিনি তো আমাদের চট্টগ্রামের গর্ব। আমরা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারকে নিয়ে গর্বিত।' সবশেষে শিক্ষার্থীদের প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের কিছু আলোকচিত্র এবং উনাকে নিয়ে লেখা সেই সময়ের সংবাদপত্রের কিছু আলোকচিত্র প্রদর্শন করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।