অ্যাসিডদগ্ধ নারীদের জন্য প্রথম আলো সহায়ক তহবিল

সিরাজগঞ্জে অ্যাসিড সন্ত্রাস বেড়ে যাওয়ায় সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের মিলনায়তনে অ্যাসিডদগ্ধ নারীদের জন্য প্রথম আলো সহায়ক তহবিলের উদ্যোগে মুক্ত আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন অ্যাসিডদগ্ধ নারীসহ , প্রশাসন ও সুধীসমাজ। সভা শেষে কয়েকজন অ্যাসিডদগ্ধ নারীকে পুনর্বাসন করা হয় ৯ আগস্ট ২০০৮ ।
ছবি: প্রথম আলো।

প্রথম আলো ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত অ্যাসিডদগ্ধ নারীদের জন্য প্রথম আলো সহায়ক তহবিল গঠিত হয় ২০০০ সালের ১৯ এপ্রিল। 'আর একটি মুখও যেন অ্যাসিডে ঝলসে না যায়' অঙ্গীকার নিয়ে প্রথম আলো অ্যাসিড-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন, ফিচার, সম্পাদকীয় বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে থাকে। যেখানে অ্যাসিড-সন্ত্রাস, সেখানেই প্রতিরোধ। অ্যাসিড-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি ও জনমত গড়ে তোলার পাশাপাশি অ্যাসিডদগ্ধ নারীদের সহায়তা দিচ্ছে 'অ্যাসিডদগ্ধ নারীদের জন্য প্রথম আলো সহায়ক তহবিল'।

প্রথম আলোর সাংবাদিকদের এক দিনের বেতন দিয়ে এই তহবিলের যাত্রা শুরু হয়। তবে মূলত তহবিলটি চলছে প্রথম আলোর পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীদের আর্থিক সহযোগিতায়। এই পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে যেমন ব্যবসায়ী, পেশাজীবী ও ছোট-বড় প্রতিষ্ঠান আছে, তেমনি আছে স্কুলপড়ুয়া ছোট্ট ছেলেমেয়ে এবং পোশাকশিল্পের কর্মী। অনেকেই আছেন, যাঁরা তহবিলে সহায়তা করেন কিন্তু নাম প্রকাশ করতে চান না। বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা থেকে পাঠকেরা প্রথম আলোর এই তহবিলে যে সহযোগিতা করেন, তা দিয়ে প্রথম আলো সহায়ক তহবিল অ্যাসিড-সন্ত্রাসের শিকার নারীদের পুনর্বাসন, শিক্ষাবৃত্তি, চিকিত্সা ও আইনি সহায়তা দিয়ে চলেছে ।

এই তহবিলের মাধ্যমে ২০০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৪৫৬ জন অ্যাসিডদগ্ধ নারীকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩০০ জনকে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ, ১০০ জনকে চিকিত্সা সহায়তা, ১২ জনকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ এবং সৌন্দর্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে ২৩ জনকে। এ ছাড়া শিক্ষা সহায়তা ১৭ জনকে, মাসিক ভাতা পাচ্ছেন ৪ জন, আইনি সহায়তা দেওয়া হয়েছে ৪ জনকে।

কঠোর আইনি ব্যবস্থা, গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার ও বহুমুখী কার্যক্রমের ফলে অ্যাসিড-সন্ত্রাসের ঘটনা কমে এসেছে। অ্যাসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশনের (এএসএফ ) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১৯ বছরের মধ্যে ২০০২ সালে অ্যাসিড-সন্ত্রাসের ঘটনা ছিল সবচেয়ে বেশি—৪৯৪ টি। ২০০৩ সালে ৪১৭ টি। ২০০৪ সালে ৩২৬ টি। ২০০৫ সালে ২২২ টি। ২০০৬ সালে ১৮৩ টি। ২০০৭ সালে ১৬২ টি। ২০০৮ সালে ১৪২ টি। ২০০৯ সালে ১২৯ টি। ২০১০ সালে ১২২ টি। ২০১১ সালে ৯১ টি। ২০১২ সালে ৭১ টি। ২০১৩ সালে ৭০ টি। ২০১৪ সালে ৫৯ টি। ২০১৫ সালে ৫৯টি। ২০১৬ সালে ৪৪ টি। ২০১৭ সালে ৩৯ টি। ২০১৮ সালে ১৮ টি। ২০১৯ সালে ১৯টি। ২০২০ সালে এমন ঘটনা ঘটেছে ২০ টি।