অ্যাসিডের সহজলভ্যতা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে অ্যাসিড–সন্ত্রাস কমবে না

প্রথম আলো ট্রাস্টের আয়োজনে গত ১৯ আগস্ট ‘অ্যাসিডবিরোধী সংলাপ: অ্যাসিড–সন্ত্রাস নির্মূলে করণীয়’ শীর্ষক সংলাপের আয়োজন করা হয়।

অ্যাসিড–সন্ত্রাস একসময় দেশের আলোচিত একটি সমস্যা ছিল। সামাজিক সংগঠন, গণমাধ্যম ও সরকারের উদ্যোগে সেই সমস্যা অনেকটা কমে আসে। তবে সম্প্রতি অ্যাসিড–সন্ত্রাস আবার বেড়েছে। এ নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে আগের মতো প্রচার–প্রচারণা নেই। সরকারি পর্যায়ে সেভাবে তদারকিও হয় না। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে গত ১৯ আগস্ট শনিবার ‘অ্যাসিডবিরোধী সংলাপ: অ্যাসিড–সন্ত্রাস নির্মূলে করণীয়’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা উঠে এসেছে। প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে এ সংলাপের আয়োজন করা হয়।

অ্যাসিডবিরোধী সংলাপে অংশ নিয়ে শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, আমি ১৯৮৬ সাল থেকে অ্যাসিডদগ্ধ মানুষদের নিয়ে কাজ করছি। আগে এসব ভুক্তভোগী ব্যক্তির পাশে গর্ভধারিণী মা ছাড়া কেউ থাকতেন না। এখন চিকিৎসার সুযোগ হয়েছে, অনেক সামাজিক সংগঠন তাঁদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। অ্যাসিড সারভাইভার্স ফাউন্ডেশন, প্রথম আলো ট্রাস্ট, সরকারি–বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠান অ্যাসিডদগ্ধ মানুষদের নিয়ে কাজ করছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কারণে ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা বাইরে আসতে পারছেন; কিছু ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। বার্নে একটা কথা আছে, প্রিভেনশন ইজ দ্য বেস্ট ট্রিটমেন্ট  অব বার্ন। আমি সব সময় বলে আসছি, বার্নের বিরুদ্ধে লড়তে হলে প্রথমে আমাদের সচেতন হতে হবে। অ্যাসিড বার্ন বেড়ে গেছে কথাটি সত্যি। এর মূল কারণ হচ্ছে, অ্যাসিড–সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হচ্ছে না। আমি আগেও বলেছি, এখনো বলছি, অ্যাসিডের সহজলভ্যতা আমরা যদি নিয়ন্ত্রণ করতে  না পারি; তবে কখনো অ্যাসিড–সন্ত্রাস কমবে না। দেশব্যাপী স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় তথা সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষকে একত্র করে অ্যাসিড–সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমাদের ইনস্টিটিউট থেকে সরকারকে জাতীয়ভাবে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একটি কমিটি করার প্রস্তাব করেছি। অ্যাসিডের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে ইউটিউব, মোবাইলের মাধ্যমে খুদে বার্তা পাঠানোসহ অনলাইনের বিভিন্ন মাধ্যম আমরা ব্যবহার করতে পারি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটি প্রতিজ্ঞা করেছি, বাংলাদেশে যেন বিনা চিকিৎসায় একজন পোড়া রোগীও মারা না যান। বর্তমানে সারা দেশের প্রতিটি মেডিকেল কলেজে একটি করে বার্ন ইউনিট খোলা হচ্ছে। সবশেষে প্রথম আলো ও প্রথম আলো ট্রাস্টকে ধন্যবাদ জানাই এ রকম একটি আয়োজনের জন্য।