অ্যাসিড–সন্ত্রাস একসময় দেশের আলোচিত একটি সমস্যা ছিল। সামাজিক সংগঠন, গণমাধ্যম ও সরকারের উদ্যোগে সেই সমস্যা অনেকটা কমে আসে। তবে সম্প্রতি অ্যাসিড–সন্ত্রাস আবার বেড়েছে। এ নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে আগের মতো প্রচার–প্রচারণা নেই। সরকারি পর্যায়ে সেভাবে তদারকিও হয় না। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে গত ১৯ আগস্ট ২০২৩ ‘অ্যাসিডবিরোধী সংলাপ: অ্যাসিড–সন্ত্রাস নির্মূলে করণীয়’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা উঠে এসেছে। প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে এ সংলাপের আয়োজন করা হয়।
অ্যাসিডবিরোধী সংলাপে অংশ নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. বিধান সরকার বলেন, আজকের সংলাপের আয়োজক প্রথম আলো ট্রাস্টকে ধন্যবাদ। অ্যাসিড বার্নের চিকিৎসা করতে গিয়ে আমাকে অনেক মামলায় সাক্ষ্য দিতে হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় যেতে হয়েছে। সম্প্রতি অ্যাসিডের মামলায় সাক্ষ্য দিতে আমি মানিকগঞ্জে তিনবার গিয়েছি। একবার সাক্ষ্য দিতে গেলাম, বিবাদীপক্ষ অনুপস্থিত। আমাকে এখনো সাক্ষ্য দিতে হচ্ছে। আজকের সংলাপে অ্যাসিডের সহজপ্রাপ্যতার কথা আলোচিত হয়েছে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার কারণে দেশব্যাপী অ্যাসিড সহজলভ্য হয়েছে।
প্রথমত, অ্যাসিডের সহজপ্রাপ্যতা রোধ করতে হবে। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, অ্যাসিডের মামলার রায় কার্যকর হচ্ছে না। মৃত্যুদণ্ড হয়েছে, কিন্তু রায় কার্যকর হচ্ছে না। রায় দ্রুত কীভাবে কার্যকর হয়, তার উপায় বের করতে হবে।
এখন শুধু নারীরা নন, পুরুষেরাও অ্যাসিড–সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি, জমি নিয়ে বিরোধ কিংবা ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে সাধারণ মানুষ অ্যাসিড–সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছেন। ঢাকা মেডিকেলে প্রতি মাসে অন্তত একজন অ্যাসিড সারভাইভারসকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে । এর মাধ্যমে অ্যাসিড–সন্ত্রাসের কারণে যাঁদের হাত, পা, গলা ও মুখ বিকৃত হয়েছে; তাঁদের চিকিৎসা করা হচ্ছে। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষকে যুক্ত করে অ্যাসিড–সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।