‘অ্যাসিডদগ্ধদের চিকিৎসার জন্য রাষ্ট্রীয় আয়োজনে ফান্ড গঠন করা প্রয়োজন’

ডা. আশিকুর রহমান।

অ্যাসিড–সন্ত্রাস একসময় দেশের আলোচিত একটি সমস্যা ছিল। সামাজিক সংগঠন, গণমাধ্যম ও সরকারের উদ্যোগে সেই সমস্যা অনেকটা কমে আসে। তবে সম্প্রতি অ্যাসিড–সন্ত্রাস আবার বেড়েছে। এ নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে আগের মতো প্রচার–প্রচারণা নেই। সরকারি পর্যায়ে সেভাবে তদারকিও হয় না। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে গত ১৯ আগস্ট ২০২৩ ‘অ্যাসিডবিরোধী সংলাপ: অ্যাসিড–সন্ত্রাস নির্মূলে করণীয়’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা উঠে এসেছে। প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে এ সংলাপের আয়োজন করা হয়।

অ্যাসিডবিরোধী সংলাপে অংশ নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার (বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ) ডা. আশিকুর রহমান বলেন, অ্যাসিড বার্ন কেমিক্যাল বার্ন হওয়ার কারণে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়। আগুন লেগে পুড়ে গেলে কিংবা গরম পানিতে পুড়লে যতক্ষণ সংস্পর্শে থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত পুড়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলতে থাকে। কিন্তু অ্যাসিড বার্ন কেমিক্যাল বার্ন হওয়ার করণে পুড়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া দুই–তিন–চার দিন ধরে চলতে থাকে। তাই অ্যাসিডে পুড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে পুড়ে যাওয়া অল্প মনে হলেও তিন–চার দিন পর দেখা যায়, গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। আবার অ্যাসিড সাধারণত দৃষ্টিগ্রাহ্য—মুখ, হাত, পা—এসব জায়গা লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা হয়। এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জীবনসংশয়ের আশঙ্কা থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা লক্ষ করেছি, অ্যাসিডে শুধু নারীরা আক্রান্ত হচ্ছেন না; পুরুষ ও শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে। অ্যাসিড সহিংসতা শুধু নারীর প্রতি সহিংসতা নয়, এটি বর্তমানে মানুষের প্রতি সহিংসতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আরেকটি বিষয়, বার্নের চিকিৎসা কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি, ব্যয়বহুল। অ্যাসিডদগ্ধদের চিকিৎসার জন্য রাষ্ট্রীয় আয়োজনে একটি ফান্ড গঠন করা প্রয়োজন। আমি সাত বছর ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে যুক্ত আছি। অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, বর্তমানে গাড়ির ব্যাটারি থেকে অ্যাসিড নিয়ে ছুড়ে মারা হচ্ছে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে। এদিকে প্রশাসনের নজর দেওয়া প্রয়োজন।