অ্যাসিডদগ্ধ সোনালী এসএসসি পাস করেছেন

অ্যাসিডদগ্ধ সোনালী খাতুন এবার (২০২২) এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪.৯৬ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

সাতক্ষীরা জেলার  তালা উপজেলার নকাটি গ্রামের নুর ইসলাম ও খোদেজা দম্পতির সন্তান সোনালী খাতুন । ২০০৩ সালে মা-বাবার সঙ্গে ঘুমিয়ে থাকা ছোট্ট সোনালী খাতুন অ্যাসিড-সন্ত্রাসের শিকার হয়েছিলেন। দুর্বৃত্তরা রাতের অন্ধকারে সোনালীর মা ও বাবার শরীরে অ্যাসিড ছোড়ে। মা-বাবার সঙ্গে সোনালীরও মাথা, মুখমণ্ডল ও শরীর ঝলসে যায়। বাঁচার আশাই ছিল না। এ ঘটনার পর তাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে ২০০৬ সালে অ্যাসিডদগ্ধ  নারীদের প্রথম আলো সহায়ক তহবিলের পক্ষ থেকে সোনালীর নামে ১০ শতক জমি বন্ধক নিয়ে দেওয়া হয়। ওই জমির আয়ে তাঁদের চলার পথ অনেকটা সুগম হয়েছে।

অ্যাসিডদগ্ধ সোনালী খাতুন এবার (২০২২) এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪.৯৬ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। পাটকেলঘাটার কুমিরা পাইলট বহুমুখী উচ্চবালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন সোনালী।

সোনালীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, প্রথম আলো ও স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা ‘স্বদেশ’ জেলা অ্যাসিড কন্ট্রোল কমিটি, আমাদের পাশে না থাকলে ঘুরে দাঁড়ানো অসম্ভব ছিল। বর্তমানে একশনএইড বাংলাদেশের সহযোগিতায় মেয়ের পড়ালেখা অব্যাহত রয়েছে। সবার সহযোগিতা না পেলে  সোনালীর পড়াশোনাই হয়তো হতো না। এ ছাড়া জেলা অ্যাসিড কন্ট্রোল কমিটি থেকে সহযোগিতাও করা হয়েছে সোনালীকে।

নুর ইসলাম আরও বলেন, বাঁশ কাটা নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছিল প্রতিবেশীদের সঙ্গে। এ বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ দুর্বৃত্তরা ২০০৩ সালের ২৮ নভেম্বর রাত ১২টার দিকে তাঁদের ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করে। এতে তাঁদের সঙ্গে সোনালীর চোখ-মুখ, মাথা ও ঘাড় ঝলসে যায়, পুড়ে যায় শরীরের একটি বড় অংশ। সোনালী বেঁচে থাকাটাই অবিশ্বাস্য । খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও ঢাকায় এক বছর উন্নত চিকিৎসা শেষে সোনালী অনেকটা সুস্থ হয়।