প্রথম আলো ট্রাস্টকে পাশে পেয়েছি, বিসিএস কর্মকর্তা হতে চাই

তারিনা আক্তার

এসএসসি ফল প্রকাশের দিন এক স্যার ফোনে রেজাল্টের খবর দেন। এ সময় আনন্দে কাঁদতে থাকেন তারিনা আক্তার। মেয়ে ফেল করেছে ভেবে মা তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন। এ সময় মেয়ের সহপাঠী বাড়িতে এসে ওই মাকে বলেন, আপনার মেয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে পাশ করেছে। কিছু টাকা ধার করে প্রতিবেশীদের মিষ্টি মুখ করান। ২০১৮ সালে বদরগঞ্জ ওয়ারেছিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছেন তারিনা। ঢাকার এক চিকিৎসক দম্পতির সহযোগিতায় প্রথম আলো ট্রাস্ট - অদম্য মেধাবী তহবিল থেকে এইচএসসি পর্যায়ে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয় তারিনাকে । ২০২০ সালে তারিনা এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছেন।

নুন আনতে পান্তা ফুরায় এমন ঘরে জন্ম তারিনার। তাই সংসারে মাথার সংখ্যা কমাতে কয়েক বছর আগে তারিনাকে বিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বাবা। কিন্তু তারিনা রাজি হননি। প্রাইভেট পড়িয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ চালিয়ে খেয়ে না খেয়ে ক্লাস করেছেন তারিনা। তার বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জ পৌরসভার শাহাপুর গ্রামে।

তারিনার বাবা অহিদুল ইসলাম স্থানীয় একটি বেকারিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। মা জেসমিন খাতুন গৃহিনী। দুই সন্তানের মধ্যে তারিনা বড়। তাদের আবাদি জমি নেই। তিন শতক বসতভিটায় রয়েছে আধা পাকা একটি ঘর। বাবা কারখানায় শ্রমিকের কাজ করে যে মজুরি পান তা দিয়ে সংসারই চলে না। তারিনা আক্তার বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে এত দুর এসেছি। প্রথম আলো ট্রাস্টকে পাশে পেয়েছি। পড়াশোনা করে বিসিএস দিয়ে প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা হতে চাই।’