‘পাঁচ মাস থাকি কাঁয়ো কামোত ন্যায় না’

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় চত্বরে বন্যার্ত মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। গতকাল সকালে।
ছবি: প্রথম আলো

গাইবান্ধা সদর উপজেলার দক্ষিণ গিদারি গ্রামে মালেকা বেগমের (৫৫) বাড়ি। দিনমজুর স্বামী খাজা মিয়া দুই বছর আগে মারা গেছেন। আর গত বছর মৃত্যু হয় বড় ছেলে আশেক আলীর। বাকি দুই ছেলেমেয়ে বিয়ে করে পৃথক থাকেন। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে ঝিয়ের কাজ করতেন। কিন্তু করোনার কারণে সেই কাজেও কেউ নিচ্ছে না।

গতকাল সোমবার মালেকা এসেছিলেন প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে দেওয়া ত্রাণ নিতে। ত্রাণ পেয়ে তিনি বলেন, ‘করোনার জন্নে পাঁচ মাস থাকি কাঁয়ো কামোত ন্যায় না। তখন থাকি ধারদেনা করি চলব্যার নাগচি। চার হাজার ট্যাকা দেনা হচে। বাড়িত একনা ছাগল আচিলো, তাক পাঁচ হাজার ট্যাকা বেচচি। দেনা শোদ করি এক হাজার ট্যাকা আচিলো, তাও শ্যাষ হচে। নয়া করি দেনা করে, মানষের কাচে চায়া খাবার নাগচি।’

গাইবান্ধা সদরের গিদারি দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় চত্বরে গতকাল প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষে দক্ষিণ গিদারি, উত্তর গিদারি ও ধুতিচোরা গ্রামের ১০০ জন বন্যার্ত নারী–পুরুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ত্রাণ কার্যক্রমে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক, সহকারী শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম, আবদুল মতিন, কবির উদ্দিনসহ গাইবান্ধার প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা অংশ নেন। এর আগে বন্ধুসভার সদস্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরকারি ও বেসরকারি ত্রাণবঞ্চিতদের খুঁজে বের করে তালিকা করেন। ত্রাণ হিসেবে প্রত্যেককে চাল, ডাল, লবণ ও আলু দেওয়া হয়েছে।

ত্রাণ পেয়ে দক্ষিণ গিদারি গ্রামের দিনমজুর মনজিল মিয়া (৪৫) বললেন, ‘এমনি করোনার জন্নে হামরা কাবু হচি। তার উপর এব্যারকা বানোত হামারঘরে ঘরবাড়ি ডুবি গেচিল। ঘরের ম্যালা জিনিসপাতি নসটো হচে। তা ভালো করব্যার পাই নাই।’

ধুতিচোরা গ্রামের বাসিন্দা আজিজার মিয়া (৬০) বলেন, ‘হামরা কাম করি যেকনা ট্যাকা কামাই করি, তাক দিয়া কোনোমতে সোংসার চলে। কিনতো গায়োত একন কাম নাই। বসি দিন পার করব্যার নাগচি। এমন করি আর কয় দিন চলমো।’

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন।

হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল

হিসাব নম্বর : ২০৭ ২০০ ১১১৯৪

ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।