অদম্য মেধাবী জান্নাতুল জানান, পড়ালেখার খরচ আব্বার দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না। ফাইভ আর এইটে বৃত্তি পাই। ওই টাকা আর বাড়িতে সারা বছর আশপাশের বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়িয়েছি। এভাবেই পড়েছি।’ জান্নাতুল বলেন, ‘আমার জেদ ছিল ভালো করতেই হবে। আমি জিপিএ-৫ পেয়ে খুব খুশি।’ এত খুশির মধ্যেও জান্নাতের মা ভাবছিলেন মেয়ের কলেজের খরচ কীভাবে জোগাবেন। সেই ছোট থেকে যাঁর মনের জোর এতটা, তিনি কেন থেমে থাকবেন? উচ্চমাধ্যমিক পড়ার জন্য জান্নাত ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্টের অদম্য মেধাবী হিসেবে নির্বাচিত হন। উচ্চমাধ্যমিকে তাঁর পড়াশোনার খরচ বহন করে ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল। তখনের মতো দুশ্চিন্তা গেলেও জান্নাত জানতেন তাঁকে এইচএসসিতেও ভালো ফলাফল করতে হবে, নইলে এইচএসসির পর আর পড়াশোনা করতে পারবেন না।
যেন হারতেই শেখেননি জান্নাত! এইচএসসিতেও জিপিএ–৫ পেলেন। স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হবেন, কিন্তু কোনো মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেলেন না। চলার পথে এবার যেন একটু হোঁচটই খেলেন জান্নাত। কষ্ট পেয়েছেন কিন্তু দমে যাওয়ার, থেমে যাওয়ার মেয়ে তো জান্নাত নন। স্বপ্ন দেখা বন্ধ করেননি জান্নাত, কেবল স্বপ্নের পথটা পাল্টে ফেলেছেন। ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্টের অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তির সহায়তায় মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে পদার্থবিজ্ঞানে ভর্তি হন জান্নাত। পদার্থবিজ্ঞান থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখেন এখন। নিজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে কী করতে চান জিজ্ঞেস করলে জান্নাত উত্তর দেন, ‘পরিবার তো বটেই। আমার মতো যারা জীবনে কষ্ট করছে, তাদের পাশে দাঁড়াব।’