স্কুলের যাবতীয় বিষয়ে তাঁর আগ্রহের সীমা নেই

শিক্ষার্থীকে পড়া বুঝিয়ে দিচ্ছেন বাবুডাইং আলোর পাঠশালার প্রাথমিক শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক লুইশ মুর্মু।

প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নে বাবুডাইং আলোর পাঠশালার প্রাথমিক শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক লুইশ মুর্মু। স্কুলের যাবতীয় বিষয়ে তাঁর আগ্রহের সীমা নেই । তিনি সম্মান শ্রেণিতে পড়াশোনা করার সময় থেকেই এ পাঠশালায় শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার পানিহারা-নাগাইল গ্রামের মৃত ভজেন মুর্মর ছেলে লুইশ মুর্মুর শুরুর গল্পটা খুব সহজ ছিল না। ২০০৭ সালে এসএসসি ও ২০০৯ সালে এইচএসসি পাস করেন তিনি। এরপর সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি হন নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে। বাড়ি থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে এসে পড়াশোনা করা তাঁর পক্ষে কঠিন ছিল। পারিবারিক অনটনের কারণে মেসে থেকে পড়াশোনাও করতে পারছিলেন না। সাঁওতাল সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থী হওয়ায় ভর্তির পরই পরিচয় হয় একই কলেজের একই সম্প্রদায়ের বড় ভাই সত্যেন্দ্রনাথ মাহাতোর সঙ্গে।

মহান বিজয় দিবসে শিক্ষার্থীকে উপহার দিচ্ছেন বাবুডাইং আলোর পাঠশালার প্রাথমিক শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক লুইশ মুর্মু।

সত্যেন্দ্রনাথ মাহাতো ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রথম আলো বন্ধুসভার বন্ধু। তাঁর সহযোগিতায় একটি মেসে ওঠেন লুইশ মুর্মু। লুইশ মুর্মু বাবুডাইং আদিবাসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (বর্তমানে বাবুডাইং আলোর পাঠশালা) শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। সেই গ্রামের একটি বাড়িতেও থাকার ব্যবস্থা করে দেন। সেই থেকে তিনি সেই বিদ্যালয়ে পাঠদান করান। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি পড়াশোনাও চালিয়ে যান। তিনি ২০১৩ সালে স্নাতক (সম্মান) ও ২০১৫ সালে স্নাতকোত্তর পাস করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি কাজ করতে থাকেন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিতে।

বাবুডাইং গ্রামের মোড়ল ও বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক কার্তিক কোল টুডু বলেন, ‘হামারঘে গাঁয়ে স্কুল খুলার পর প্রায় চার বছর পর লুইশ মাস্টারকে এ স্কুলে মাস্টার হিসেবে লিয়্যা আসা হয়। ওই আসাতে হামারঘে ছ্যালাপিল্যারা আরও একটু আগাইয়্যা যায়। হামারঘে সম্প্রদায়ের শিশুরাও আদিবাসী মাস্টার পাইয়্যা উৎফুল্ল হয়।’