প্রতি বছর বর্ষবরণ আয়োজন করে গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালা

বর্ষবরণ উদ্‌যাপনের জন্য শিক্ষার্থীরা লাইনে দাঁড়িয়ে আছে।
ফাইল ছবি

গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালায় সারা বছর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো পয়লা বৈশাখ উদযাপন। এই বর্ষবরণ উদ্‌যাপনের জন্য শিক্ষার্থীরা অপেক্ষা করে থাকে।

গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার সহকারী শিক্ষক মোসলেমা খাতুন বলেন, ‘পয়লা বৈশাখের আগের দিন সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয়ে যায় বিদ্যালয় সাজানোর কাজ। বিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক থেকে শুরু করে গ্রামের ছেলেরাও বিভিন্ন কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করে। সকাল থেকে শুরু হয় বর্ষবরণের আমেজ। পান্তা-ইলিশের আয়োজন করা হয়। স্কুলের শিক্ষার্থীরা ও গ্রামের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা বাসন্তী রঙের শাড়ি পড়ে, হাতে লাল চুড়ি, খোঁপায় ফুল, মাথায় বৈশাখী ফিতা, স্টিকার, কপালে লাল রঙের টিপ, ঠোঁটে লাল লিপস্টিক দিয়ে চলে আসে। আবার গুড়িহারী গ্রামের ছেলে রাজশাহী আর্ট কলেজে পড়া এক শিক্ষার্থী সালমান শাহ্ রং পেনসিল নিয়ে বিদ্যালয়ের এক কোণে বসে। সবাই সেখানে ভিড় জমায় তার কাছ থেকে গালে কুলা, একতারা, পয়লা বৈশাখ ইত্যাদি এঁকে নেয়।’

বর্ষবরণ উদ্‌যাপন করছে শিক্ষার্থীরা।
ফাইল ছবি।

গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক মো. নূর আলম বলেন, পয়লা বৈশাখের সকালে শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। গরুর গাড়ি সাজিয়ে সামনে মাইক বেঁধে দিয়ে সামনে গরুর গাড়ি ধীরে ধীরে চলে আর পেছনে রাস্তার দুই পাশ দিয়ে শিক্ষার্থীরা হেঁটে যায়। একই সাথে সবার মুখে গান উচ্চারিত হয়- "এসো হে বৈশাখ এসো এসো"।

এগুলো দেখে গুড়িহারী গ্রামের বাসিন্দা নুরুল আমিন বলেন, ‘এই বিদ্যালয়টি হওয়ার আগে আমাদের গ্রামে কোনো দিন পয়লা বৈশাখ পালন করতে দেখিনি। আলোর পাঠশালাটি হওয়ার পর থেকে আমাদের গ্রামে পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন করা হয়। সেই দিন আমি সারা দিন স্কুলের দিকে থাকি এবং সাহায্য-সহযোগিতা করি। আমার খুব ভালো লাগে।’

গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থী আসমাউল হোসনা বলেন, ‘এই বিদ্যালয়ে যেমনভাবে বর্ষবরণ উদ্‌যাপন করা হয় অন্য স্কুলে তেমনিভাবে বর্ষবরণ উদ্‌যাপন করা হয় না। এই স্কুলে লেখাপড়া যেমন ভালো পাশাপাশি বিনোদনও হয়। পয়লা বৈশাখের দিন আমরা সবাই অনেক আনন্দ করি।’

বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় যেখানে বহুদিন শিক্ষার আলো পৌঁছায়নি এ রকম অবহেলিত কয়েকটি এলাকায় শিক্ষার আলো পৌঁছে দিচ্ছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। সামিট গ্রুপের আর্থিক সহায়তায় প্রথম আলো ট্রাস্ট গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালাসহ ৬টি স্কুল পরিচালনা করছে।