পরিবারের সহযোগিতায় পড়ালেখা এগিয়ে নিচ্ছেন তুনজেরা খাতুন

বাবুডাইং আলোর পাঠশালার এসএসসি পরীক্ষার্থী তুনজেরা খাতুন। সমাজের নানা বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও বাবা-মায়ের সহযোগিতায় এগিয়ে নিচ্ছেন নিজেকে। চারজন সদস্য নিয়ে তুনজেরার পরিবার। দুই ভাই-বোনের মধ্যে তিনি বড়। ছোট ভাই আহাদ আলী ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে বাবুডাইং আলোর পাঠশালায়। প্রায় দুই কিলোমিটার  পথ পাড়ি দিয়ে নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন । করেন নিয়মিত পড়াশোনাও। পরিবারের সদস্যরাও তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন।

তুনজেরার মা ডলিয়ারা বেগম বলেন, 'হামারঘে গাঁয়ে মেয়েদের বাল্যবিহ্যা অহরহই হয়। বেটিটাকে যে এ পরযন্ত লেখাপড়া কর‌্যাছি তাই ম্যালা। গাঁয়ের লোকজন ও কুটুম সদররা খালি বেটিকে বিহ্যা দিবার ল্যাগ্যা কহে। কহে, বেটি বড় হলে জামাই পাবি না। এ লিয়্যা কম কথা শুনতে হয়। কিন্তু হামরা বেটিকে পূর্ণ বয়স কর‌্যািই বিহা দিব। আগে এসএসসি পাস করুক। কলেজে ভর্তি করাবো। তারপর বিহ্যার কথা ভাববো। তাতে লোকে যাই বলুক।'

তুনজেরার বাবা তরিকুল ইসলাম বলেন, 'হামার দু ছ্যালা-পিলা। নিজে নিলফামারিতে হরেক রকম কাঁচা মালের ব্যবসা করি। নিজে বেশিদূর পড়ালেখা করতে পারিনি। তাই হামার স্বপ্ন, ছ্যালাপিলাকে পড়াবো। টাকার কথা ভাবিনি। ওরাকে পড়াতে টাকা লিয়্যা চিন্তা করিনা। হামার বেটিটাকে এতদূর পড়ানোর ল্যাগা মাস্টাররাও পরিশ্রম করে। একদিন  স্কুলে না গেলে মোবাইল কইর‌্যা খোঁজ লিতে থাকে।'

বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক লুইশ মুরমু বলেন, 'তুনজেরা পড়ালেখাতে ভালো। তার পরিবারও পড়াশোনাতে এগিয়ে নিতে তাকে সাহায্য করে। তার বাবা প্রায়ই মেয়ের খোঁজ নেন।' পরিবার ও আলোর পাঠশালার শিক্ষকদের সহযোগিতায় পড়ালেখা এগিয়ে নিচ্ছেন তুনজেরা।