আলোর পাঠশালার জীবন আলী

রুটিন মাফিক পরীক্ষা দিতে যান জীবন।পরীক্ষা শেষ করে বাড়ি ফিরে এসে দেখেন বাবা মারা গেছেন। দুপুরে নিজ কাঁধে বাবার লাশ বহন করে দাফন কাজ সম্পন্ন করেন।

২০১৯ সাল। গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থী জীবন আলী তখন জে.এস.সি. পরীক্ষার্থী। রুটিন মাফিক পরীক্ষা দিতে যান জীবন। পরীক্ষা শেষে ফিরে এসে দেখেন বাবা নেই, হঠাৎ করেই মারা যান জীবনের বাবা। পরীক্ষা শেষ করে বাড়ি ফিরে এসে দুপুরে নিজ কাঁধে বাবার লাশ বহন করে দাফন কাজ সম্পন্ন করেন। এত শোকের পরও সে জে.এস.সি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে ৪.০৭ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। শুধু তাই নয় ২০১৮ সালে বিদ্যালয়ে তাঁর উপস্থিতিও ছিল শতভাগ। আর্থিকভাবে জীবন আলীর পরিবার অস্বচ্ছল । মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। যেটুকু রোজগার হয় তা দিয়ে কোন রকম তাদের সংসার চলে। মায়ের কষ্ট দেখে এবং পরিবারের অভাবের কারণে লেখাপড়ার পাশাপাশি কখনও অন্যের চায়ের দোকানে আবার কখনও অন্যের জমিতে দিন মজুরের কাজও করতে হয় জীবন আলীর। কিন্তু জীবন আলীর লেখাপড়া করার ইচ্ছা প্রবল।

জীবন আলীর মা বলেন, ‘হামার ব্যাটার পড়ালেখা করার খুব ইচ্ছা। আর আলোর পাঠশালা না থাকলে হামার বেটার পড়ালেখা হতো না। স্কুলত ভর্তি করাতে হামার কোন টাকা-পয়সা লাগিনি। আবার পড়াতে কোন খরচও দিতে হয় না।স্কুলত থেকে মেলাই উপহার পাইছি । শুধু তাই লয়, মাস্টারেরা মাঝে মধ্যে মোবাইলত কল দিয়ে হামার বেটার পড়ালেখার খোঁজ খবর লেই।' জীবন এবার এস.এস.সি-২০২২ পরীক্ষায় অংশগ্রহন করবেন। ২০১৯ সালেও পরীক্ষার সময় বাবা পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে গেছেন জীবনকে। এবার হয়তো জীবন একাই যাবেন পরীক্ষা কেন্দ্রে বা মা দাঁড়িয়ে থাকবেন দূরে। কিন্তু জীবন বিশ্বাস করেন তাঁর বাবার আশীর্বাদ আছে তাঁর সঙ্গে। সকলের শুভকামনা থাকবে জীবনের জন্য।